চট্টগ্রাম নগরের চাক্তাই খাল থেকে গত শনিবার এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রোববার উবায়দুল্লাহ নামে এক ব্যক্তি এসে নিজের ছেলে আব্দুর রহিম পরিচয় দিয়ে মরদেহ নিয়ে যান ভোলায়। সেখানে দাফনও করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার (৮ মে) ঘটনা ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। জানা যায়, আব্দুর রহিম পরিচয়ে যাকে ছয়দিন আগে দাফন করা হয়েছে তিনি জীবিত। পাওনা টাকা দিতে না পেরে মোবাইল ফোন বন্ধ করে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।
শুক্রবার (৯ মে) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা।
এদিকে ছেলে নিখোঁজ হওয়ায় তার বাবা মনে করেছিলেন ছেলে খুন হয়েছেন। তাই নিজের ছেলে মনে করে নিয়ে গিয়ে দাফন করেছেন বলে পুলিশের কাছে এমন দাবি করেছেন আব্দুর রহিমের বাবা উবায়দুল্লাহ।
তিনি বলেন, আমার ছেলে চট্টগ্রামে নির্মাণশ্রমিকের কাজ করতেন। পহেলা মে সকালে একটি ফোন পেয়ে বের হয়ে কর্মস্থল থেকে নিখোঁজ হন। আমার ছেলে অনলাইন জুয়াড়ির খপ্পরে পড়েছিলেন। তাদের হাতে সে খুন হতে পারে বলে ধারণা করেছিলাম। কোতোয়ালি থানা পুলিশও আমাকে মরদেহ বুঝিয়ে দেয়। আমি মরদেহ ভোলায় নিয়ে যাই। সেখানে দাফন করি।
বৃহস্পতিবার নির্মাণশ্রমিক আব্দুর রহিমের নাম্বারটি সচল পেয়ে যাচাই করতে গিয়ে তাকে জীবিত দেখতে পান পিবিআই। তারা তাকে হেফাজতে নেন।
আব্দুর রহিম পিবিআই কর্মকর্তাদের জানান, পাওনা টাকা দিতে না পেরে তিনি মোবাইল বন্ধ রেখে লুকিয়ে ছিলেন। পরে তার বাবাকে ডেকে আনা হয়। দুজনকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
আব্দুর রহিমের বাবা উবায়দুল্লাহ পিবিআই কর্মকর্তাদের জানান, খোঁজাখুজি করেও ছেলের হদিস না পাওয়ায় মরদেহটি তার ছেলের মনে করেছিলেন। মরদেহটি বিকৃত থাকায় ছেলের মরদেহ বলে ভুল করেছিলেন। তার অন্যকোন উদ্দেশ্য ছিল না। পিবিআইয়ের তদন্তেও তা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এ বিষয়ে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বলেন, খাল থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের পর ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই। আব্দুর রহিমের মোবাইল চালু হলে যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে জানা যায় তিনি জীবিত। পরে বাবা-ছেলেকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ছেলে জানিয়েছে পাওনাদারদের হাত থেকে বাঁচতে মোবাইল বন্ধ করে আত্মগোপনে ছিলেন। বাবা জানিয়েছেন তিনি ছেলেকে চিনতে ভুল করেছেন। যার মরদেহ দাফন করা হয়েছে তার ডিএনএ সংগ্রহ করা আছে। মরদেহটির দাবিদার পাওয়া গেলে ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হবে।
Post a Comment