স্কুলের টাকায় মামলা চালান প্রধান শিক্ষিকা!

 


প্রধান বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত ৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধেও রিভিও পিটিশন। বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামানকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা অঞ্জলী রাণী শীল। বরং তিনি আদালতে মামলা করে বিদ্যালয়ের ফান্ডের লাখ লাখ টাকা খরচ করে ৭ বছর যাবৎ প্রধান শিক্ষকের চেয়ার জবর দখল করে রেখেছেন।

 ১৯৯১ সালে পাইকগাছা শহীদ জিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক অবসরে গেলে পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। এ সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন সহকারী শিক্ষিকা অঞ্জলী রানী শীল। যথা সময়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়। সে অনুযায়ী ৩ আগস্ট ২০১৭ নিয়োগ পরীক্ষায় ১২ জনের মধ্যে মো. মনিরুজ্জামান প্রথম হন। নিয়োগ বোর্ড সভাপতিকে নিয়োগ প্রদানের জন্য লিখিত সুপারিশ করেন। সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম তাকে নিয়োগপত্র প্রদান করেন। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা অঞ্জলি রাণী শীল তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে শিক্ষক শহিদুল ইসলামকে বাদী করে পাইকগাছা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা করান। অঞ্জলি শীলের নাটক বুঝতে পেরে কিছু দিন পর বাদী মামলা প্রত্যহার করেন। 


দায়িত্ব বুঝে পেতে মনিরুজ্জামান হাইকোর্টে পিটিশন করেন। আদালতের দ্বৈত বিচারপতি এম এনাইতুর রহিম ও মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি শুনানি করেন এবং ১৯ আগস্ট ২০১৯ সালে মামলার ৩ নম্বর বিবাদী যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যানকে প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামানকে দায়-দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ প্রদান করেন। এ আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে অঞ্জলি রাণী শীল নতুন একটি রিট পিটিশন করলে আদালত সেই শুনানি খারিজ করে পূর্বের আদেশ বহাল রাখেন। 


এরপর অঞ্জলি রাণী শীল এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন। যে মামলায় প্রধান বিচাপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত ৬ বিচারপতি পূর্বের রায় বহাল রেখে আদেশ দেন। 


এর বিরুদ্ধে আবারও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অঞ্জলি রানী শীল সিভিল রিভিউ পিটিশন করেন। এরপর তিনি মামলাটি না চালিয়ে সময়ক্ষেপণ করায় প্রতিপক্ষ রাষ্ট্রীয়ভাবে আইনজীবী নিয়োজিত করেছেন। মামলাটি কার্যতালিকায় রয়েছে। 

কেন প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছেনা ও ফান্ডের টাকা কিভাবে খরচ করছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা অঞ্জলি রাণী শীল বলেন, নিয়োগে অস্বচ্ছতা থাকায় দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া রেজুলেশন করে তৎকালীন সভাপতি ইউএনও জুলিয়া সুকায়না অনুমতি দিয়েছিলেন স্কুলের টাকা খরচ করে মামলা চালানোর।


বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শওকত হোসেন বলেন, তার চেয়ার ও ক্ষমতা ধরে রাখতে মামলা করে প্রতিষ্ঠানের ২ লাখ ৮২ হাজারের বেশি টাকা খরচ করেছেন। 


তৎকালীন সভাপতি শোখ রফিকুল ইসলাম বলেন, নিয়োগ বোর্ডের সকল সদস্যদের সুপারিশ পত্রে স্বাক্ষর রয়েছে। এ ছাড়া ওই রেজুলেশনে সদস্য সচিব হিসেবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকারও স্বাক্ষর রয়েছে।



Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post