হাসনাতের ওপর হামলা: গ্রেপ্তারের তালিকায় ঘরোয়া লিগের ক্রিকেটার, এনসিপির ক্ষোভ

 


গাজীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার ঘটনায় ঘরোয়া লিগের একজন ক্রিকেটারকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আল আমিন নামের ওই ক্রিকেটার অনুর্ধ্ব ১৯ পর্যায়ে বিভিন্ন লিগে অংশ নিয়েছেন।গাজীপুরের এনসিপি নেতাদের অভিযোগ, শুধু আল আমিনই নন, হামলার এ ঘটনায় তড়িঘড়ি করে নিরপরাধ অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর দায় তারা নেবে না।অন্যদিকে পুলিশ বলছে, আল আমিন যেন সহজে জামিন পান সে চেষ্টা করবেন তারা।  


গত রোববার গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। এ সময় হাসনাতকে বহন করা গাড়ির কাচ ভাঙচুর করা হয়। আহত হন হাসনাত নিজেও। 


এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ৫৪ জনকে আটক করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)। পরে সোমবার সন্ধ্যায় এনসিপির সদর উপজেলার আহ্বায়ক আল আমিন খন্দকার নগরীর বাসন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আটক ব্যক্তিদের ওই মামলা গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।  





এনসিপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, এ মামলায় গ্রেপ্তারদের মধ্যে আল আমিন নামে একজন ক্রিকেটারও রয়েছেন। এ ঘটনার যেহতু কোনো প্রত্যক্ষদর্শী নেই, তাই পুলিশ নিজেদের মতো করে মামলার এজাহারে অভিযুক্তদের নাম লিপিবদ্ধ করেছে।

 

মামলার নথি থেকে পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মামলার আসামি তালিকায় থাকাদের মধ্যে ১ থেকে ১২ নম্বর পর্যন্ত যাদের নাম এসেছে তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। এ তালিকায় ১৩ নম্বরে আছেন ২৩নং ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপনের নাম। এরপর যাদের নাম আছে তারা যুবলীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মী। 


আসামির তালিকায় শেষের দিকে আছে সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল, সাবেক প্রতিমন্ত্রী রোমানা আলী ও ছাত্রলীগ নেতা নাসির মোড়লের নাম। 


এনসিপি নেতাদের অভিযোগ, তদন্তের দুর্বলতার কারণে এ ঘটনার ইন্ধনদাতা ও নির্দেশদাতারা আড়ালে পড়ে গেছেন। 

 

এনসিপির গাজিপুর জেলা প্রতিনিধি ইব্রাহিম মুসা বলেন, ‘মামলার আগেই ৫৪ জনকে আটক করে পুলিশ। যাদের আটক করা হলো, তা কী শুধু সংখ্যায় বেশি দেখানোর জন্য? আমরা জানি না। মামলার আগেই তো প্রকৃত অপরাধীদের আটক করা উচিত। নিরপরাধ কাউকে ধরে এনে বলবে, এই দেখো আমরা ধরে এনেছি। এমনটা আমরা চাই না।’ 


ইব্রাহিম মুসা বলেন, ‘আমরা অসহায় মানুষের জন্যই আন্দোলন করেছি। মামলা করার আগে যাদের ধরেছে তাদের ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না। এর মধ্যে আল আমিন নামে একজন ক্রিকেটার আছেন। আমরা যতদূর জানি, তিনি নির্দোষ। তারপরও তাকে ধরা হয়েছে। এজন্য আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। এ ধরনের কর্মকাণ্ড পুলিশের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’

 

আল আমিনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জিএমপির অতিরিক্ত উপ কমিশনার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘হাসনাত আব্দুল্লাহর উপর হামলা ও হত্যা চেষ্টার মামলায় মঙ্গলবার নতুন করে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ক্রিকেটার আল আমিনকে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের সময় পুলিশকে বাদী কিছুই বলেন নি। বিষয়টি নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহর সঙ্গে কথা হয়েছে যেন ক্রিকেটার আল আমিন সহজেই জামিন পান।’ 


এ ধরনের গ্রেপ্তার মামলার তদন্ত প্রশ্নবিদ্ধ করছে কী না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, মামলার তদন্ত সঠিক ভাবে এগোচ্ছে।’


এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ৫৪ জনকে আটক করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)। পরে সোমবার সন্ধ্যায় এনসিপির সদর উপজেলার আহ্বায়ক আল আমিন খন্দকার নগরীর বাসন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আটক ব্যক্তিদের ওই মামলা গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।স্থানীয়দের অভিযোগ, তৎপরতা দেখা অনেক সাধারণ ও নিরপরাধ মানুষকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন খোদ এনসিপির নেতাকর্মীরাও।



Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post