কোন কোন লক্ষ্মণ দেখলে বুজবো ক্যান্সার


ক্যান্সার একটি জটিল রোগ, এবং এর লক্ষণগুলো বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ আছে যা দেখলে আপনার সচেতন হওয়া উচিত এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এই লক্ষণগুলো দীর্ঘস্থায়ী হলে বা ক্রমাগত বাড়তে থাকলে তা ক্যান্সারের ইঙ্গিত দিতে পারে, তবে সব সময় যে ক্যান্সারই হবে এমনটা নয়। তবুও, দ্রুত পরীক্ষা করানো জরুরি।

ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণসমূহ

 * অস্বাভাবিক ওজন হ্রাস: কোনো ডায়েট বা ব্যায়াম ছাড়াই যদি হঠাৎ করে দ্রুত ওজন কমে যায় (যেমন, ২-৩ মাসে ৫-১০ কেজি), এটি একটি গুরুতর লক্ষণ হতে পারে। পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, ফুসফুস বা খাদ্যনালির ক্যান্সারে এমনটা বেশি দেখা যায়।

 * চরম ক্লান্তি: শারীরিক পরিশ্রম ছাড়াই যদি আপনি দীর্ঘস্থায়ী ও অস্বাভাবিক ক্লান্তি অনুভব করেন যা বিশ্রাম নিলেও দূর হয় না, তবে এটি লিউকেমিয়া, কোলন ক্যান্সার বা পাকস্থলীর ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

 * শরীরে অস্বাভাবিক পিণ্ড বা ফোলা: শরীরের যেকোনো স্থানে নতুন বা অস্বাভাবিক পিণ্ড বা দলা দেখা গেলে (যেমন, স্তন, অণ্ডকোষ, লসিকা গ্রন্থি বা শরীরের নরম টিস্যুতে) তা পরীক্ষা করানো উচিত। এটি ক্যান্সার বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

 * দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন: যদি আপনার কাশি দীর্ঘদিন ধরে থাকে এবং ওষুধের পরেও না কমে, অথবা আপনার কণ্ঠস্বর ভেঙে যায় বা কর্কশ হয়ে যায়, তবে ফুসফুসের ক্যান্সার বা গলার ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

 * অস্বাভাবিক রক্তপাত বা স্রাব:

   * মল বা প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া (কোলন, মূত্রথলি বা প্রোস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে)।

   * যোনিপথ বা স্তনবৃন্ত থেকে অস্বাভাবিক রক্তপাত বা স্রাব।

   * কাশি বা থুতুর সাথে রক্ত যাওয়া (ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে)।

 * মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন: দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য, অথবা মলের আকৃতির পরিবর্তন (যেমন সরু হওয়া) কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

 * দীর্ঘস্থায়ী বদহজম বা গিলতে অসুবিধা: যদি আপনার দীর্ঘদিন ধরে বদহজম হয় বা খাবার গিলতে অসুবিধা হয়, তবে তা খাদ্যনালী, পাকস্থলী বা গলার ক্যান্সারের ইঙ্গিত দিতে পারে।

 * ত্বকের অস্বাভাবিক পরিবর্তন:

   * ত্বকের কোনো তিল বা আঁচিলের আকৃতি, রঙ বা আকারে পরিবর্তন, বা চুলকানি/রক্তপাত।

   * ত্বকের রঙে পরিবর্তন (যেমন ত্বক হলুদ, গাঢ় বা লালচে হয়ে যাওয়া)।

   * ক্ষত যা সহজে শুকায় না।

 * দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা: শরীরের কোনো অংশে যদি দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা থাকে যা ওষুধের পরেও কমে না, তবে এটি ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। ব্যথার স্থান ক্যান্সারের ধরনের উপর নির্ভর করে (যেমন, ব্রেইন টিউমার বা মলাশয়ের ক্যান্সারে)।

 * ঘন ঘন জ্বর বা সংক্রমণ: যদি আপনার ঘন ঘন জ্বর আসে বা সহজে সংক্রমণ হয়, তবে এটি ক্যান্সারের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার লক্ষণ হতে পারে (যেমন, ব্লাড ক্যান্সার বা লিম্ফোমা)।

কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন?

উপরে উল্লিখিত যেকোনো লক্ষণ যদি কয়েক সপ্তাহ ধরে একটানা থাকে এবং স্বাভাবিকভাবে না কমে, তবে দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত করতে পারলে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

মনে রাখবেন, এই লক্ষণগুলো সব সময় ক্যান্সারের কারণে নাও হতে পারে, তবে ঝুঁকি না নিয়ে পরীক্ষা করানোই বুদ্ধিমানের কাজ।


Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post