আমাদের রক্তে মোমজাতীয় একধরনের পদার্থ থাকে, যাকে আমরা চিনি কোলেস্টেরল নামে। এটি আমাদের শরীরের সুস্থ কোষ গঠনের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তবে একটি কথা মাথায় রাখতে হবে, অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। কীভাবে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, সেটাও বেশ ভাবনার বিষয়। কিন্তু চিন্তার কিছু নেই। প্রকৃতি থেকেই আমরা এর সমাধান পেতে পারি। আর সমাধানের নাম ফলমূল। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে যদি নিয়ম মেনে ফলমূল খাওয়ার চর্চা করতে পারি, তাহলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা আমাদের জন্য খুব সহজ।ফল যেভাবে কোলেস্টেরল কমায়
ফলে আছে ফাইবার, ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা হৃদ্যন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার বা খাদ্যআঁশ কোলেস্টেরল কমানোর মূল উপাদান হিসেবে কাজ করে। দ্রবণীয় ফাইবার পরিপাকক্রিয়ায় কোলেস্টেরল বৃদ্ধি আটকে দেয় এবং তা শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে।
যেসব ফল কোলেস্টেরল কমায়
লেবুজাতীয় ফল
লেবুজাতীয় ফল, যেমন কমলা, জাম্বুরা, লেবু ইত্যাদিতে বিদ্যমান ভিটামিন সি কোলেস্টেরল কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। লেবুজাতীয় ফলগুলোতে পেকটিন নামক একধরনের দ্রবণীয় ফাইবার থাকে, যা এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এলডিএল কোলেস্টেরল খারাপ কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া লেবুজাতীয় ফলে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড ধমনিকে নমনীয় রাখার পাশাপাশি প্রদাহ কমাতে সাহায্যযেভাবে খেলে সবচেয়ে উপকার মিলবে
দিনের শুরুতে এক গ্লাস তাজা কমলা বা জাম্বুরার রস খেতে পারেন।
পানি খাওয়ার সময় তাতে এক টুকরা লেবু যোগ করুন।
সালাদ বা মাছজাতীয় খাবারে কমলা বা জাম্বুরার টুকরা ব্যবহার করুন।
রস করে না খেয়ে যদি সম্ভব হয় ফলটি আস্ত খান।
তবে কিছু ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে বলে জাম্বুরা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নিন।
আপেল
আপেলে থাকা পেকটিন এবং অন্যান্য দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় ফাইবার কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত আপেল খেলে এলডিএল কোলেস্টেরল উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস পায়। পাশাপাশি আপেলে থাকা পলিফেনল অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রক্তনালিকে সুরক্ষা দেয় এবং প্রদাহ কমাতেযেভাবে খেলে সবচেয়ে উপকার মিলবে
ওটমিল সকালের স্বাস্থ্যকর নাশতাগুলোর একটি। তাতে আপেল যোগ করতে পারেন।
পিনাট বাটারের সঙ্গে আপেলের টুকরা মিশিয়ে একটি স্বাস্থ্যকর নাশতা বানিয়ে খাওয়া যায়।
সালাদে আপেলের টুকরা মিশিয়ে খান।
আপেলের পুষ্টিগুণ যাতে নষ্ট না হয়ে যায়, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। তাই রস করে না খাওয়াকলা
কলা কোলেস্টেরল কমানোর কাজে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। এতে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার ও প্ল্যান্ট স্টেরল যৌথভাবে শরীরকে কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দেয়। কলার ফাইবার হজমশক্তি ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা হৃদ্যন্ত্রের জন্য উপকারীযেভাবে খেলে সবচেয়ে উপকার মিলবে
সকালে সিরিয়াল কিংবা দইয়ের সঙ্গে কলা মিশিয়ে খান।
স্মুদি বানাতে কলা ব্যবহার করুন।
হোল হুইট বা আস্ত গমের আটা দিয়ে কলার পাউরুটি বানাতে পারেন, যাতে ফাইবার বেশি থাকে।
কলার জুস না করে আস্ত ফল খাওয়াই ভালো। কারণ, জুস করে খেতে গেলে ফাইবারসহ বেশির ভাগ গুণই নষ্ট হয়েযদিও সব ফলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, তারপরও সম্ভব হলে ফল খান খোসাসহ। কারণ, এতে ফাইবার বেশি পাবেন।
তাজা ফল জুসের চেয়ে ভালো। কারণ, জুসে প্রায় সব ফাইবার চলে যায়।
প্রতি সপ্তাহে নানা রকমের ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন, যেন সব ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়।
ফলের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও প্রোটিনযুক্ত খাবার খেলে দীর্ঘস্থায়ী শক্তি পাওয়া যায়।
ফল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো, তবে মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। যায়।।ই ভালো। সাহায্য করে। করে।
Post a Comment