২৮ বছর পর মিলল অক্ষত মরদেহ

২৮ বছর পর মিলল অক্ষত মরদেহ

পাকিস্তানের পাহাড়ঘেরা কোহিস্তান অঞ্চলে এক গলতে থাকা হিমবাহের নিচ থেকে মিলল ২৮ বছর আগে নিখোঁজ হওয়া এক ব্যক্তির মরদেহ। উদ্ধারকারী রাখাল ও স্থানীয়রা তার অবিকৃত দেহ ও অক্ষত পোশাক দেখে হতবাক হয়ে পড়েছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্বাঞ্চলের এক প্রত্যন্ত ও দুর্গম পার্বত্য উপত্যকা কোহিস্তানের ‘লেডি ভ্যালি’ এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। এখানেই গত সপ্তাহে এক রাখাল হঠাৎই গলতে থাকা হিমবাহের মধ্যে এক মানবদেহ দেখতে পান। আশ্চর্যের বিষয় হলো- দেহটি ছিল সম্পূর্ণ অক্ষত। এমনকি পরনের জামাকাপড়ও ছিল অক্ষত।

মরদেহের পাশ থেকে উদ্ধারকৃত জাতীয় পরিচয়পত্রে তার নাম লেখা ছিল নাসিরউদ্দিন। এর সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে, ওই ব্যক্তি ১৯৯৭ সালের জুন মাসে নিখোঁজ হয়েছিলেন এই এলাকাতেই। পুলিশের ধারণা, বরফঝড়ের সময় হিমবাহের ফাটলে পড়ে যান তিনি।

পারিবারিক বিরোধের কারণে ভাই কাছিরউদ্দিনের সঙ্গে তিনি বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন। তবে দুপুর নাগাদ নাসিরউদ্দিন একটি গুহার ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর আর ফেরেননি।

কাছিরউদ্দিন জানান, ভাই ফিরে না আসায় তিনি আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেন এবং স্থানীয় লোকদের সহায়তায় অনুসন্ধান চালান। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি।

হিমবাহে এভাবে দেহ অক্ষত থাকার ব্যাখ্যা দিয়ে কমস্যাটস বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ বিলাল বলেন, যখন কোনো দেহ হিমবাহে পড়ে, তখন প্রচণ্ড ঠান্ডায় তা সঙ্গে সঙ্গে জমে যায়। বরফের ভেতরে আর্দ্রতা ও অক্সিজেনের অভাব থাকায় দেহটি এক প্রকার মমির মতো হয়ে যায়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সম্প্রতি ওই অঞ্চলে তুষারপাত কমে গেছে। ফলে হিমবাহগুলো সূর্যের আলোয় সরাসরি গলে যাচ্ছে। দ্রুত এই গলনই সম্ভবত নাসিরউদ্দিনের দেহকে দৃশ্যমান করেছে।

নাসিরউদ্দিনের মরদেহ প্রথম দেখতে পান ওমর খান নামে এক রাখাল। তিনি বলেন, আমি যা দেখেছি, তা চোখে দেখেও বিশ্বাস করতে পারিনি। দেহটা পুরো অক্ষত। এমনকি তার জামাকাপড়েও একটুও ছেঁড়ার চিহ্ন ছিল না।

নাসিরউদ্দিনের দেহ শনাক্ত হওয়ার পর স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র কৌতূহল দেখা দেয়। নাসিরউদ্দিনের স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post