নাকের লোম তুলছেন, এতে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে!

 অনেকেই নাকের লোমকে সৌন্দর্যের অন্তরায় মনে করেন। তাই টুইজার বা চিমটার সাহায্যে তা তুলে ফেলার প্রবণতা রয়েছে অনেকের মধ্যেই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অভ্যাস হতে পারে ভয়ানক ক্ষতির কারণ। এমনকি এর ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে !নাকের লোম অনেক সময় বাইরে বেরিয়ে আসে, যা দেখতে অস্বস্তিকর লাগতে পারে। কিন্তু তাই বলে টুইজার বা চিমটা দিয়ে তা উপড়ে ফেলা শরীরের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরা।

নাকের লোম শুধুমাত্র একটি দৃষ্টিকটূ উপাদান নয়, এটি আসলে আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। নাক দিয়ে যখন আমরা বাতাস গ্রহণ করি, তখন সেই বাতাসে থাকা ধুলো, অ্যালার্জেন এবং জীবাণুগুলোকে আটকে ফেলার কাজ করে এই লোম। একে প্রাকৃতিক ফিল্টার বললেও ভুল হবে না।


বিশেষজ্ঞদের মতে, নাকের ভেতরের লোম আমাদের শরীরের প্রাকৃতিক ফিল্টার হিসেবে কাজ করে। বাতাসে থাকা ধুলোবালি, অ্যালার্জেন ও জীবাণু প্রথমেই এই লোমে আটকে যায়। ফলে এসব ক্ষতিকর উপাদান ফুসফুসে পৌঁছায় না।

অনেকে সৌন্দর্যের খাতিরে নাকের লোম টুইজার দিয়ে তুলে ফেলেন। এতে সাময়িকভাবে তা দেখতে সুন্দর লাগলেও এর ফলে শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে সংক্রমণ। কারণ, লোমের গোড়ার চারপাশে থাকে সূক্ষ্ম রক্তনালি। লোম তুলে ফেললে সেখানে গর্ত তৈরি হয়, যার মধ্য দিয়ে ব্যাকটেরিয়া রক্তে প্রবেশ করতে পারে। এর ফলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে সারা শরীরে এমনকি মস্তিষ্কেও। এতে মারাত্মক অসুস্থতা এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।


চিকিৎসকদের মতে, নাকের লোম গোড়া থেকে তুলে ফেললে সেখানে ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়। এই গর্ত দিয়ে সহজেই ব্যাকটেরিয়া রোমকূপে প্রবেশ করে রক্তে মিশে যেতে পারে। কারণ লোমের গোড়ার চারপাশেই সূক্ষ্ম রক্তনালী থাকে। এর ফলে সারা শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।

বচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো, এই ব্যাকটেরিয়া অনেক সময় মস্তিষ্কেও পৌঁছে যেতে পারে। যার ফলে মেনিনজাইটিস বা অন্যান্য মারাত্মক মস্তিষ্কজনিত রোগ হতে পারে এমনকি প্রাণহানিও ঘটতে পারে।


তাহলে কী করণীয়?

নাকের লোম যদি অতিরিক্ত দীর্ঘ হয়ে নাকের বাইরে বেরিয়ে আসে, তাহলে সেটিকে চিমটা দিয়ে গোড়া থেকে তুলে না ফেলে, বরং সাবধানে কাঁচি বা স্পেশাল ট্রিমার ব্যবহার করে কেটে ফেলা উচিত। বর্তমানে বাজারে নাকের লোম কাটার জন্য বিশেষ ছোট কাঁচি বা বৈদ্যুতিক ট্রিমার সহজলভ্য।

চিকিৎসকেরা বলছেন, যদি নাকের লোম বেশি বড় হয়ে যায়, তবে সেটি গোড়া থেকে না তুলে সাবধানে কাঁচি বা নাকের জন্য তৈরি বিশেষ ট্রিমার দিয়ে ছেঁটে ফেলাই ভালো। এতে নাকের ফিল্টারিং ব্যবস্থাও অক্ষুণ্ন থাকবে, আবার সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকবে না।


বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, লোম কেটে ছোট করলেও গোড়া যেন অক্ষত থাকে। এতে করে ফিল্টারিং ক্ষমতা বজায় থাকবে এবং ইনফেকশনের ঝুঁকিও থাকবে না।


নিজেকে সুন্দর রাখতে গিয়ে যদি শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নষ্ট করে ফেলেন, তবে সেটি হবে মারাত্মক ভুল। তাই সৌন্দর্যচর্চা হোক সচেতনতার সঙ্গেই। সৌন্দর্যচর্চা অবশ্যই জরুরি, তবে তা যেন সচেতনতার বাইরে না যায় এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।


Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post