time
Welcome to Our Website!

Top News

সময়ে-অসময়ে শিশুর বিপদ-আপদ এবং অভিভাবকের করণীয়

 



শিশুর অসুখ-বিসুখ যেন লেগেই থাকে। হঠাৎ করে নবজাতকের কান্না, পেটব্যথা, কানব্যথা, পিঁপড়া অথবা পোকামাকড়ের কামড়, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, হাত-পা মচকানো, অ্যালার্জির কারণে সাদা শরীরে লাল দানাÑ এ ধরনের সমস্যার কারণে পিতা-মাতা উদ্বিগ্ন হন এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। শিশুর স্বাস্থ্য সম্পর্কে সাধারণ ধারণা থাকলে চিকিৎসকের কাছে না গিয়েও এসব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।


কান্না : খিদে পেলে, পেটব্যথা অথবা কানব্যথায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিশুরা কান্নাকাটি করে থাকে। খিদের কান্না এবং ব্যথার কান্নার ধরন একটু খেয়াল করলে সহজেই মা পৃথক করতে পারেন। খিদের কান্নার সময় শিশুরা থেকে থেকে কান্না করে এবং পাশাপাশি মুখ হাঁ করে এদিক-ওদিক তাকাতে দেখা যায়। মা তার শিশুর জন্য বুকের দুধ বা ফিডার দুধ দেওয়ামাত্র এ কান্নার অবসান হয়। অন্যদিকে শিশুর ব্যথার কান্না সুতীব্র এবং একটানা চলতে থাকে। খাবার দিলেও এই কান্নার উপশম হয় না। পেটে গ্যাস অথবা কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পেটে ব্যথার জন্য শিশু কাঁদতে দেখা যায়।


পেটব্যথা : ডায়রিয়া, আমাশয় জীবাণু, জিয়ার্ডিয়ার জীবাণু এবং কৃমি ইত্যাদি প্রবেশ করলে শিশুর খাবারে অনীহা, বমি বমি ভাব, পেট ফেঁপে থাকা, পাতলা পায়খানা অথবা আমযুক্ত মলত্যাগ করতে পারে। অনেক শিশুর ক্ষেত্রে দুধ পরিবর্তন করলে, বুকের দুধ ছাড়িয়ে গরুর দুধ বা বাজারে প্রচলিত দুধ দিলে এই রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ সময় শিশুকে কাঁধের ওপর রেখে আলতো করে চাপড় দিলে গ্যাস বের হয়ে যায় এবং শিশুর কান্নাও থেমে যায়। এছাড়া সিমেথিকোন জাতীয় পেটব্যথার ড্রপ ব্যবহার করলেও উপকার পাওয়া যায়। তবে পেটব্যথার জন্য গ্রাইপওয়াটার জাতীয় জিনিস খাওয়ানো উচিত নয়।


কানব্যথা : শিশুর ঠাণ্ডা লেগে কানের সংক্রমণ হলে, ময়লা জমলে, আঘাত পেলে কান ব্যথা করতে পারে। এ সময় কানে গরম তেল ব্যবহার করা নিষেধ। কানে গরম সেঁক দেওয়া যেতে পারে। ঘরে রাখা প্যারাসিটামল সিরাপ বয়স অনুযায়ী খাওয়াতে হবে। শিশু মুখ খুলে শ্বাস নিলে নাকের নরমাল স্যালাইন ড্রপ দিতে হবে, গোসলের সময় কানে যেন পানি না যায়, সে বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।


হাত-পা মচকানো : অসাবধানতাবশত শিশুকে এক হাতে ধরে কোলে নিতে গেলে হাতের সংলগ্ন জয়েন্টের মাংসপেশি অথবা লিগামেন্ট ছিড়ে যেতে পারে অথবা হাড্ডিগুলো স্থানচ্যুত হতে পারে। বরফ সেঁক দিন, প্যারাসিটামল জাতীয় সিরাপ খাওয়ান এবং ডাক্তারের পরমার্শ নিন।


নাক দিয়ে রক্ত পড়া : হঠাৎ করে নাক দিয়ে রক্ত পড়তে দেখলে অভিভাবকরা ভীষণ ঘাবড়ে যান। নাকে ঘা হলে এবং সেই ঘা খুঁটলে শিশুদের নাক দিয়ে রক্ত পড়ে। পাশাপাশি নাকে আঘাত পেলে, ঠাণ্ডাজনিত কারণে, রক্তের কোন অসুখের কারণেও নাক দিয়ে রক্ত পড়তে দেখা যায়। হঠাৎ করে নাক দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হলে ঠাণ্ডা মাথায় ধীরে ধীরে যা করবেনÑ শিশুর নাক দুটো দুই আঙুলে চেপে ধরুন। বরফ সেঁক দিন নাকের ওপর। না কমলে তুলো গুটাল করে নাকের ছিদ্রে প্রবশে করান। এতেও না কমলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।


শিশুর শ্বাস বন্ধ রাখা : হঠাৎ করেই কোন সুস্থ শিশু কান্না করতে করতে শ্বাস বন্ধ করে ফেলে। অনেক সময় হাত- পা শক্ত করে ফেলে এবং এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারে। এটা একটা শিশুর ভিন্ন্ আচরণ, শিশু যখন রেগে যায়,ভয় পেয়ে যায় অথবা ব্যথা পেলে এমন দেখতে পাওয়া যায়। এ সময় শিশুর মন ভুলিয়ে রাখতে হবে। মন ভোলানোর জন্য নিত্য নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। এ রোগে শিশুর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। শিশুর বয়স ৬ বছর পরে এ অসুবিধা আর দেখতে পাওয়া যায় না।


লেখক : অধ্যাপক, শিশু বিভাগ, বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা


চেম্বার : আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর -৬ ঢাকা


হটলাইন : ১০৬৭২

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post