জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রায় যুদ্ধের রূপ ধারণ করে ফেলেছে ইতোমধ্যে। দুই সপ্তাহ ধরে চলা হুমকি-ধমকির পর গত ৬ মে মধ্যরাতে বাস্তবিকই পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরসহ আশপাশের কয়েকটি স্থানে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দিয়েছে ভারত। এ হামলার কঠিন জবাব দিতে উঠেপড়ে লেগেছে পাকিস্তানও।
গত দুদিন ধরে দুদেশ থেকেই ভেসে আসছে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার খবর। এতে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে উভয় দেশ।
শুক্রবার (৯ মে) মধ্যরাতেও পাওয়া গেছে এমন খবর। পাকিস্তান ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী দাবি করেছেন, তাদের বিমানবাহিনীর তিনটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে একযোগে বড় ধরনের মিসাইল হামলা চালিয়েছে ভারত। তবে, ৬টি মিসাইল ভারতের নিজ রাজ্য পাঞ্জাবেই পড়েছে। খবর আল জাজিরার।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাক ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেছেন, রাওয়ালপিন্ডির নূর খান বিমানঘাঁটি, সরকোটের রফিকি বিমান ঘাঁটি এবং চকওয়ালের মোরাইদ ঘাঁটিতে মিসাইল হামলা করেছে ভারত। তবে, গুরুত্বপূর্ণ নূর খান ঘাঁটির হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে পাকিস্তান।
উল্লেখ্য, মাত্র গতকালই সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবাইর এই নূর খান ঘাঁটি ব্যবহার করে পাকিস্তানে প্রবেশ করেন। পাকিস্তানের বড় বড় নেতা ও বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এ ঘাঁটি ব্যবহার করেই পাকিস্তানে যাওয়া-আসা করেন।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, হামলায় এয়ার টু সারফেস মিসাইল ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ বিমান থেকে মিসাইল ছুড়ে ঘাঁটি ধ্বংসের চেষ্টা চালিয়েছে ভারতীয় বাহিনী।
পাক ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক দাবি করেন, ভারতের কিছু মিসাইল তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে বিমানঘাঁটির কাছে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু, ঘাঁটির কোনো সম্পদ (বিমান বা অন্যান্য জিনিস) ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
এদিকে ভারতের এ হামলার পর পর পাকিস্তানের পুরো আকাশসীমা মধ্যরাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে এ হামলার জবাবে ভারতেও বড় ধরনের হামলা চালানো হবে বলে ঘোষণা করেছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফের এ-ও দাবি, ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে পাঞ্জাবের সংখ্যালঘু শিখ সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে মিসাইলগুলো ছুড়েছে।
এ ছাড়া একই রাতে ভারতের আরও ৬টি ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলার দাবিও করেছেন পাকিস্তান ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক। তবে তার তথ্য অনুযায়ী, সেগুলো ভারতের নিজ রাজ্য পাঞ্জাবেই পড়েছে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরীর দাবি, ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে পাঞ্জাবের সংখ্যালঘু শিখ সম্প্রদায়ের ওপর মিসাইলগুলো ছুড়েছে।
তিনি বলেন, ভারত পাঞ্জাবের ঝালান্দার বিভাগের অদমপুর থেকে ব্যালিস্টিক মিসাইলগুলো ছোড়ে, যার মধ্যে একটি অদমপুরে আঘাত হানে। আর বাকি পাঁচটি তারা ফেলে পাঞ্জাবেরই অমৃতসরে। ভারত তাদের পরিকল্পনার মাধ্যমে পাঞ্জাবের শিখ সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
পাক ডিজিএফআই মহাপরিচালকের এমন ‘অদ্ভুত’ অভিযোগের পরও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ভারত।
Post a Comment