রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) নামক ভাইরাসজনিত রোগ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে। গত এক মাসে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে শতাধিক গরু ও বাছুর। আক্রান্ত পশুর মধ্যে ছোট বাছুরের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যা খামারি ও কৃষকদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গোয়ালন্দ পৌরসভাসহ উপজেলার চারটি ইউনিয়নে প্রায় ৮০ হাজার গরু ও বাছুর রয়েছে। এর মধ্যে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চর কর্ণেশোনা, ফকিরাবাদ, আংকের শেখেরপাড়া, হোসেন মণ্ডলপাড়া এবং ছোটভাকলা ইউনিয়নের স্বরূপার চক ও ভাগলপুর গ্রাম এলাকায় এলএসডির প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি।
এলএসডি একটি ছোঁয়াচে ভাইরাসজনিত রোগ যা মশা-মাছির মাধ্যমে এক পশু থেকে আরেক পশুর দেহে সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। রোগের লক্ষণ হিসেবে গরুর গায়ে গুটি দেখা যায়, ত্বক ফুসকুড়িযুক্ত হয় এবং আক্রান্ত পশুর উচ্চ জ্বর হয়। খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধরে দুর্বলতা বজায় থাকে।
অংকের শেখেরপাড়া গ্রামের কৃষক হাসমত আলী বেপারী জানান, “আমার বকনা বাছুরটির সারা গায়ে গুটি দেখা দিয়েছে, জ্বরও প্রচণ্ড। ও কিছুই খেতে পারছে না। পশু হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বললেন এটি এলএসডি।”
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন জানান, “রোগটি অত্যন্ত সংক্রামক এবং ছোট বাছুরদের জন্য বেশি বিপজ্জনক। এখনও পর্যন্ত এ রোগ প্রতিরোধে সরকারি কোনো টিকা নেই। আমরা নিয়মিত গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে খামারি ও কৃষকদের সচেতন করছি।”
তিনি আরও বলেন, রোগ প্রতিরোধে গরুর গোয়ালঘর ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখা, মশারির ব্যবহার, পুষ্টিকর খাদ্য প্রদান এবং গরম পানিতে নিমপাতা সেদ্ধ করে গরু গোসল করানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে আক্রান্ত গরু পুরোপুরি সুস্থ হতে দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগে।
এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণহানি না ঘটলেও গোয়ালন্দে ‘লাম্পি আতঙ্ক’ ঘনিয়ে এসেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও খামারিরা দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে রোগটির বিস্তার আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেনখুলনার রূপসায়
Post a Comment