পাবনায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত ৫

 


পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা দেবোত্তর ডিগ্রি কলেজের অভিভাবক সদস্য পদে মনোনয়ন ফরম তোলা নিয়ে বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।এসময় বিএনপি ও জামায়াতের অফিস এবং ২৩টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনা উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, দেবোত্তর ডিগ্রি অনার্স কলেজের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের জন্য কলেজ থেকে তফসিল ঘোষণা করা হয়। অভিভাবক সদস্য মনোনয়নপত্র উত্তোলনের শেষদিন ছিল বৃহস্পতিবার। এদিন দুপুরে আটঘরিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আছিম উদ্দিন অভিভাবক সদস্য পদের মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন। তার সাথে আরও দুজন বিএনপি সমর্থিত অভিভাবকও মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন। কিছুক্ষণ পর জামায়াতে ইসলামীর উপজেলা আমির নকিবুল্লাহ, সাবেক আমির নাসির, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ওয়ালিউল্লাহসহ বেশকিছু নেতা-কর্মী গিয়ে তাদের মনোনীত একজনের মনোনয়নপত্র চান। এসময় বিএনপির পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়। এ নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের ইসলামীর নেতা-কর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। এসময় জামায়াতের একজন মারধরের শিকার হন। এ খবর পেয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবিরসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা দেবোত্তর বাজারে জড়ো হয়। বিকেলে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দেবোত্তর বাজারে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। 


এসময় দেবোত্তর বাজারে বিএনপি অফিস ও আশপাশের কমপক্ষে ২৩টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। উভয়পক্ষের কয়েকজন কমবেশি আহত হএদিকে, সন্ধ্যার পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। অফিস কক্ষে আগুন দেয়। পরে আটঘরিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।এদিকে, মুহূর্তের মধ্যে বাজারের সকল দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালায়। 


আহতদের মধ্যে বিএনপির মামুন (৪২), কামরুল ইসলাম (৩৮), আছিম উদ্দিন (৫৫), রতন মোল্লা (৩৮) ও জামায়াতে ইসলামীর সাইদুল ইসলামের (৪২) নাম জানা গেছে। বাকিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। আহতরা বিভিন্ন ক্লিনিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 


এ বিষয়ে আটঘরিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন আলম বলেন, ‘জামায়াতের নেতা-কর্মীরা অতর্কিত আমাদের দলীয় অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করছে। কলেজে তাদের সাথে ধাক্কাধাক্কি ও জোর করে বের করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। জামায়াতের নেতারা বানিয়ে বানিয়ে বলকী কারণে ভাঙচুর করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে পুলিশসহ সবাই বসছে। এখন ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলব।’ 


আটঘরিয়া উপজেলা জামায়াতের আমির মো. নকিবুল্লাহ বলেন, ‘দেবোত্তর ডিগ্রি অনার্স কলেজের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে অভিভভাবক সদস্য পদের মনোনয়নপত্র জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে তুলতে গেলে বিএনপির লোকজন বাধা দেয়। সেই সাথে তারা আমাদের আটঘরিয়া পৌর জামায়াতের আমিরকে মারধর করে। আসরের নামাজ আদায়কালে বিএনপির লোকজন মসজিদের সামনে গুলি ও বোমা ফাটালে আমরা নামাজ শেষে তাদের প্রতিহত করতে ধাওয়া দিয়েছি। পরে মিছিল থেকে অনেকে মুসল্লি ছিল তাদের মধ্যে হয়তো কেউ বিএনপির অফিস ভাঙতে পারে। সন্ধ্যার পরে আবার বিএনপি নেতা-কর্মীরা আমাদের অফিস ভাঙচুর করেছে।’ 


এ বিষয়ে আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোা. শফিকুজ্জামান বলেন, ‘উভয়পক্ষের অফিস ভাঙচুর হয়েছে। কিছুটা সংঘর্ষ হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে। উত্তেজনা বিরাজ করায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেদেবোত্তর ডিগ্রি অনার্স কলেজের অধ্যক্ষ মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘অভিভাবক সদস্য নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের আজ ছিল শেষ দিন। বিএনপির পক্ষ থেকে তিনজন উত্তোলন করলেও জামায়াতে লোকজন তুলতে আসলে তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে কী হয়েছে সেটা আমার জানা নেই। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই কলেজের এই নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে।’।’ছে।’য়।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post