যারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়র সহকারী শিক্ষক হতে চান, তাদের জন্য আসছে বিশাল নিয়োগ। প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিধিমালা চূড়ান্ত হলে আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে প্রকাশ করা হবে বড় একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধলাখ শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এই বিজ্ঞপ্তিতে থাকবে না পোষ্য ও নারী কোটা। ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে।
সম্প্রতি ডিপিইর পলিসি ও অপারেশন বিভাগের সহকারী পরিচালক (নিয়োগ) কামরুন নাহারের স্বাক্ষর করা এক নির্দেশনায় দেশের সব জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের কাছে শূন্যপদের তথ্য চাওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ একটি চলমান প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত প্রধান ও সহকারী শিক্ষকদের শূন্যপদের হালনাগাদ তালিকা প্রয়োজন। নির্ধারিত ছকে ২০ মে’র মধ্যে ই-মেইলের মাধ্যমে এসব তথ্য পাঠাতে হবে।
ডিপিই সূত্র বলছে, বর্তমানে সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ৮ হাজার ৪৩টি সহকারী শিক্ষকের পদ ফাঁকা রয়েছে। জুন মাস নাগাদ এই সংখ্যা ১০ থেকে ১২ হাজারে পৌঁছাতে পারে। সব মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার পদ ফাঁকা হতে পারে।
এ ছাড়া, দীর্ঘদিন ধরে শূন্য পড়ে থাকা ৩২ হাজার প্রধান শিক্ষকের পদও এবার পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এসব পদে সরাসরি নিয়োগ নয়, সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকেই পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হবে।
তাই বলা যায়, সামনে যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে, সেখান থেকে বেশিসংখ্যক প্রার্থী নেওয়া হবে। আবেদনের সময় পদ বাছাই করে দেওয়ার সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা।
প্রাথমিকের ২০২৫ সালের নতুন বিধিমালায় কোটা থাকবে না। তবে ২০ শতাংশ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের অগ্রাধিকার থাকবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উচ্চ আদালতের রায় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুসারে, সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির সব গ্রেডে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে ৯৩ শতাংশ। বাকি ৭ শতাংশ নিয়োগ হবে কোটার ভিত্তিতে। প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদটি ১৩তম গ্রেডের। তাই এই পদের নিয়োগে ৭ শতাংশের বেশি কোটা রাখার সুযোগ নেই। ৭ শতাংশ কোটার মধ্যে রয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানের জন্য ৫ শতাংশ; ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকদের জন্য ১ শতাংশ কোটা। অন্য ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে।
প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক পদে ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
সূত্রে জানা যায়, ক্লাস্টারের ভিত্তিতে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। একেকটি জেলা–উপজেলায় ২০ থেকে ২৫টি বিদ্যালয় মিলে একটি করে ক্লাস্টার হয়। এই হিসাবে সারা দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট ক্লাস্টার রয়েছে ২ হাজার ৫৮৩টি। একটি ক্লাস্টারের জন্য একজন করে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নেওয়া হবে। ২০ থেকে ২৫টি বিদ্যালয়ের জন্য একজন করে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। ক্লাস্টারের হিসেবে দুটি পদ মিলে মোট ৫ হাজার ১৬৬ সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে সংগীত বিষয়ে ২ হাজার ৫৮৩ ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে ২ হাজার ৫৮৩ জন।
Post a Comment