ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের মা শামসুন্নাহার বেগম আজ থেকে তার উত্তরার নিজের বাসায় থাকতে পারবেন বলে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ
সোমবার (৫ মে) বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আইনজীবীরা জানান, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের মা আজ থেকে তার নিজের বাসায় থাকতে পারবেন বলে নির্দেশনা দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে বিচারিক (নিম্ন) আদালতকে মামলাটি নিষ্পত্তি করার জন্য আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সেলিমের একক বেঞ্চ রাজধানীর উত্তরার বাড়িতে ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের মা শামসুন্নাহার বেগম এবং ভাই শিশির আহমেদ শাহনেওয়াজের বসবাস নিয়ে বিচারিক আদালতের স্থিতাবস্থার আদেশ বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট। এর ফলে ওই বাড়িতে শামসুন্নাহার বেগম ও শিশির আহমেদের বসবাসের ক্ষেত্রে আর কোনো আইনগত বাধা নেই বলে জানান আইনজীবীরা। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করেন বিচারপতি মো. সেলিমের একক বেঞ্চ।
আদালতে ওইদিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, আইনজীবী বিএম ইলিয়াস কচি, ব্যারিস্টার মনজুর রাব্বী ও ব্যারিস্টার আতিকুল হক। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাইফুল করিম।
ব্যারিস্টার আতিকুল হক সাংবাদিকদের বলেন, রাজধানীর উত্তরায় পাঁচতলা বাড়িতে বসবাসকে কেন্দ্র করে বিচারিক আদালতের স্থিতাবস্থার আদেশ বাতিল করে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এর ফলে ওই বাড়িতে তুরিন আফরোজের মা শামসুন্নাহার বেগম ও ভাই শাহনেওয়াজের বসবাসের ক্ষেত্রে আর কোনো আইনগত বাধা নেই।
নি বলেন, রাজধানীর উত্তরার ১১ নম্বর সড়কের ৩ নম্বর সেক্টরের ১৫ নম্বর প্লটের পাঁচতলা বাড়িতে ২০০২ সাল থেকে বসবাস করে আসছিলেন শামসুন্নাহার বেগম এবং তার ছেলে শিশির আহমেদ শাহনেওয়াজ। তবে নিজের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে শামসুন্নাহার বেগম ও শাহনেওয়াজকে ওই বাড়ি থেকে ২০১৭ সালে বের করে দেন তুরিন আফরোজ। পরে ওই বাড়ির ভোগদখল ও মালিকানা দাবি করে শাহনেওয়াজ ও তুরিন আফরোজ ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দুইটি দেওয়ানি মামলা করেন।
উল্লেখ্য, বিচারিক আদালতের মামলার আরজিতে তুরিন আফরোজ দাবি করেছেন, ১৯৯১ সালে ক্রয়সূত্রে উত্তরার সম্পত্তির মালিক হন তুরিনের মা শামসুন্নাহার। পরের বছর ১৯৯২ সালে শামসুন্নাহার তার স্বামী তসলিম উদ্দিনকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিযুক্ত করেন। পরে ১৯৯৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তসলিম উদ্দিন মেয়ে তুরিন আফরোজকে হেবা (দানপত্র) করেন।
তবে শামসুন্নাহার ও তার ছেলে শাহনেওয়াজ আদালতে লিখিত জবাব দিয়ে বলেছেন, তসলিম উদ্দিন কখনও তার মেয়ে তুরিন আফরোজকে উত্তরার সম্পত্তি দান করেননি। বরং শামসুন্নাহার তার ছেলে শাহনেওয়াজকে উত্তরার সম্পত্তি ১৯৯৭ সালে হেবা করে দেন।
পরে ওই জমি শাহনেওয়াজের নামে নামজারি করে ১৯৯৯ সালে হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের কাছ থেকে ২৫ লাখ ঋণ নেওয়া হয় এবং রাজউকের অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী নির্মাণ করা বাড়িতে ২০০২ সাল থেকে বসবাস করে আসছিলেন তারা।
Post a Comment