স্কুল বন্ধ রেখে কোরবানির পশুর হাট, ক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

 


কুমিল্লার চান্দিনায় স্কুল মাঠে কোরবানির পশুর হাট বসায় ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগের দিনও পাঠদান করা সম্ভব হয়নি। নামমাত্র বিদ্যালয় খোলা থাকলেও শুধু বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ ছাড়া বাকি সব শ্রেণি কক্ষই ছিল বন্ধ। বিদ্যালয়ের মাঠ ছাপিয়ে বিদ্যালয় ভবনের বারান্দায়ও গরু-ছাগল বেঁধে রাখা হয়েছে।


সোমবার (২ মে) উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এই চিত্র দেখা যাএমন পরিস্থিতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা গেছে।

ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারের নির্ধারিত স্থানে বাৎসরিক স্থায়ী গরু বাজার ইজারা নিয়ে কোরবানির ঈদের মৌসুমে সেই বাজার চলে আসে স্কুল মাঠে। আবার ঈদের আগ মুহূর্তে উপজেলা প্রশাসন থেকে অস্থায়ী গরু বাজার ইজারা নিয়ে সেই বাজারেরগুলো বসাচ্ছে স্কুল মাঠে। বছরের পর বছর এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলেও স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসনখোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলা বছরের শুরুতে চান্দিনা পৌরসভাসহ উপজেলায় ৪টি স্থায়ী গরু বাজার ইজারা দেয় প্রশাসন। এর মধ্যে প্রতিবছরের ন্যায় উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর গরু বাজারটি প্রায় ৫৪ লাখ টাকায় ইজারা নেয় ইজারাদার। কিন্তু ঈদের পূর্ব মুহূর্তে সেই গরু বাজার নিয়ে আসা হয় দোল্লাই নবাবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে।


এছাড়া উপজেলা প্রশাসন প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ২১টি অস্থায়ী গরু বাজার ইজারা দেয়।


এর মধ্যে শ্রীমন্তপুর, কাদুটি ও ধেরেরায় গরু বাজার বসে ৩টি পৃথক বিদ্যালয় মাঠে। প্রশাসন ওইসব গরু বাজার নির্ধারিত বাজারে ইজারা দিলেও ইজারাদার তাদের সুবিধার্থে স্কুলের মাঠে খুঁটি বসিয়ে বাজার চালিয়ে যায়। উপজেলার ২৬টি স্থায়ী ও অস্থায়ী গরু বাজারের মধ্যে ৪টি বাজারই স্কুল মাঠে।

বিদ্যালয়ে মাঠে গরুর হাট বসায় একদিকে যেমন ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের পাঠদান। অপরদিকে বিদ্যালয়ের মাঠ কর্দমাক্ত হয়ে খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে দোল্লাই নবাবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন জানান, বাজারের নির্ধারিত স্থান থাকলেও কোরবানির মৌসুমে স্কুল মাঠেই প্রতি বছর গরু বাজার বসে। আজ (সোমবার) সকালে বৃষ্টি হওয়ায় গরু ছাগল নিয়ে স্কুলের বারান্দায় চলে আসে। এখনও বারান্দায় ক্যাশ কাউন্টার রয়েছে। বিগত বছরগুলোতে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনেকবার বলেছি, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এবছর কাউকে কিছু বলিনি। মাঠে গরু বাজার থাকায় শিক্ষার্থীদের আসতে সমস্যা হচ্ছে।


কাদুটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সফিকুল ইসলাম জানান, বছরের পর বছর এভাবেই চলছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে আমাদের উচ্চ বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান সোমবার পর্যন্ত চলে। এরই মধ্যে গরু বাজারও চলে।


দোল্লাই নবাবপুর বাজারের ইজারাদার মো. শাহজাহান সাজু বলেন, গরু বাজারের নির্ধারিত স্থানে জায়গা কম থাকায় যুগের পর যুগ কোরবানির ঈদ মৌসুমে স্কুল মাঠেই বাজার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতি নিয়ে বাজার চালাচ্ছি।


শ্রীমন্তপুর গরু বাজারের ইজারাদার জাকির হোসেন জানান, স্কুল মাঠের বেশির ভাগ অংশই খাস জমি। আমরা ইজারা নিয়ে সেই খাস জায়গায় গরু বাজার বসিয়েছি।


চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ আশরাফুল হক জানান, কোন মাঠে গরু বাজার বসানোর জন্য আমি অনুমতি দেইনি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। যারাই স্কুল মাঠে বাজার বসিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।পড়ছে।।য়।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post