ভারতে ৫০০ টাকার নোট বন্ধ হচ্ছে এমন গুজব রোববার (২২ জুন) থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্ট থেকে এই খবরের সূত্রপাত হয়। যেখানে দাবি করা হয়, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এটিএমে ৫০০ টাকার নোট আর দেওয়া হবে না।
তবে, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (RBI) বা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনো অফিসিয়াল ঘোষণা এখনও আসেনি। ফলে বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি আপাতত ভিত্তিহীন গুজব।
কী বলছে বিশ্লেষণ?
ব্যাংকিং পর্যবেক্ষকদের মতে, যদিও RBI কিছুদিন আগে ব্যাংকগুলোকে ১০০ ও ২০০ টাকার নোট বেশি রাখতে বলেছে, ৫০০ টাকার নোট বন্ধের বিষয়ে কোনো নির্দেশ নেই। তবে ভারতের ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল লেনদেনের হার দেখে অনেকে মনে করছেন, ভবিষ্যতে উচ্চমূল্যের নোট ধীরে ধীরে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে UPI লেনদেন হয়েছে ৭০% পর্যন্ত, যা নগদ নির্ভরতা কমানোর ইঙ্গিত দেয়।
নগণের প্রতিক্রিয়া
ব্যবসায়ীদের একাংশ এই সম্ভাবনায় চিন্তিত, কারণ খুচরো লেনদেনের জন্য ৫০০ টাকার নোট অনেকটাই কার্যকর।
তরুণ প্রজন্ম ও প্রযুক্তি ব্যবহারকারীরা এটিকে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার প্রাকৃতিক অগ্রগতি হিসেবেই দেখছেন।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো এক পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এটিএম-এ ৫০০ টাকার নোট আর পাওয়া যাবে না। এই খবরে অনেকেই ২০১৬ সালের নোটবন্দির তিক্ত অভিজ্ঞতা স্মরণ করছেন।
ইতিহাস থেকে শিক্ষা
২০১৬ সালে ৫০০ ও ১০০০ টাকার পুরনো নোট বাতিল করে নতুন নোট চালু করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কালো টাকা, জাল কারেন্সি ও সন্ত্রাসে অর্থ যোগানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবে ব্যাখ্যা দেওয়া হলেও RBI-এর রিপোর্ট অনুযায়ী ৯৯.৩% পুরনো নোট ব্যাংকে ফিরে আসে, যা এই সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
সম্ভাব্য প্রভাব
যদি ৫০০ টাকার নোট সত্যিই বন্ধ হয়,
- ছোট ব্যবসায়ী ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে বড় আঘাত আসতে পারে
- নগদ নির্ভর বাজারে লেনদেনের জটিলতা বাড়বে
- ছায়া অর্থনীতি, যা এখনো ভারতের ২৩-২৬% GDP, ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে
বিশেষজ্ঞরা কী বলছে?
এখনো পর্যন্ত RBI বা সরকার এই খবর নিশ্চিত করেনি। তাই এই গুজবে আতঙ্কিত না হয়ে সরকারি ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করাই যুক্তিযুক্ত।
পরামর্শ
- অফিসিয়াল সোর্স ছাড়া কোনো খবর বিশ্বাস না করা
- ডিজিটাল লেনদেনকে ধীরে ধীরে গ্রহণ করার প্রস্তুতি নেওয়া
- গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকা
উল্লেখ্য, ৫০০ টাকার নোট বন্ধের কোনো সত্যতা নেই এখনো।RBI-এর পক্ষ থেকে নিশ্চিত কিছু না আসা পর্যন্ত এ বিষয়ে উদ্বেগের কারণ নেই। ২০১৬ সালের নোটবন্দির অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে, এবার নাগরিকদের আরও সচেতন ও তথ্যনির্ভর হওয়ার সময়।
Post a Comment