দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল কিশোরী

 


বাবার মৃত্যুর পর বেঁচে থাকার তাগিদে পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ নিয়েছিল। বাড়ি থেকে কিছু জিনিস নিতে যাওয়ার পথে সিএনজিচালিত অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করছিল। এ সময় চার তরুণ ওই কিশোরীকে (১৫) ঘিরে ধরে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। কিন্তু একটি স্থানে নিয়ে ওই কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এরপর ব্রহ্মপুত্র নদে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তবে স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় প্রাণে বেঁচে যায়।নিজের সঙ্গে ঘটনা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আজ সোমবার বিকেলে ময়মনসিংহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেয় মেয়েটি। পুলিশ জানায়, কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ইতিমধ্যে ময়মনসিংহ নগরের শম্ভুগঞ্জ এলাকার ১৭ বছর বয়সী কিশোর ও রঘুরামপুর এলাকার মো. কাইয়ুমকে (১৯) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।


সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ময়মনসিংহের ভালুকার একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করে ওই কিশোরী। মা ও দুই বোন সেখানেই থাকেন। তাঁদের বাড়িতেও এক বোন থাকেন। সন্তানসম্ভবা বোন ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকায় বাড়ি থেকে কিছু জিনিস নিতে ১৮ জুন সকালে গৌরীপুরে গ্রামের বাড়ি ফিরছিওই কিশোরীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সেদিন সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংহ নগরের পাটগুদাম ব্রিজ মোড়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করছিল ওই কিশোরী। এ সময় ১৭ বছর বয়সী কিশোর ও কাইয়ুমসহ চারজন কিশোরীকে ঘিরে ধরে। মেয়েটির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ফুসলিয়ে নগরের শম্ভুগঞ্জ এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে রঘুরামপুর ইউসি হাইস্কুল মাঠসংলগ্ন সারগুদামের একটি পরিত্যক্ত কক্ষে নিয়ে ১৭ বছর বয়সী কিশোর ও রঘুরামপুর গ্রামের মো. রায়হান (২০) ধর্ষণ করেন। এ সময় বাইরে পাহারায় ছিলেন অপর দুই তরুণ। পরে সেখানেই কিশোরীকে ফেলে রেখে চলে যাওয়ার পর লোকলজ্জার ভয়ে পাটগুদাম সেতু থেকে ব্রহ্মপুত্র নদে লাফ দেয় ওই কিশোরী। স্থানীয় লোকজন মেয়েটিকে উদ্ধার করেন।


খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে অচেতন অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। কোতোয়ালি থানার পুলিশ নিজের খরচে হাসপাতালে মেয়েটির চিকিৎসা করায়। এরপর পুলিশ মেয়েটির পরিবার খুঁজে বের করে। এ ঘটনায় মেয়ের মা ১৯ জুন থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিমামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার হয়ে মেয়েটি নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধারের পর আমরা নিজেরা অর্থের জোগান দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। মৃত্যুর মুখোমুখি থেকে মেয়েটি প্রাণে বেঁচেছে। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আজ বিকেলে আদালতে নিজের সঙ্গে ঘটা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা দুজনকে গ্রেপ্তার করেছি, বাকি দুজনকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছি।’শ।ল।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post