ফরিদপুর শহরের গুহ লক্ষীপুর এলাকার রেলওয়ে বস্তিতে দীর্ঘদিন ধরে চলা মাদক কারবার ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। এ সময় ওই অঞ্চলের মাদককারবারি শিল্পীসহ ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর আদালতে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে শুক্রবার ভোর ৪টা পর্যন্ত সেনাবাহিনীর ১৫ রিভারাইন ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়ন ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে।
গ্রেফতাররা হলেন- গুহলক্ষীপুর এলাকার শিল্পী বেগম (৩০), মেহেরুন নেছা (২২), মুক্তা বেগম (২৭), রেশমা বেগম (৩০), চৈতি (১৮), আইরিন (২৭), মো. সনজন খান (৩৫), সূর্য মোল্যা (৪৫), হযরত আলী (২০), নুর ইসলাম (৪০), মো. ইদ্রিস কাজি (৫৫), বাবু শেখ (৩৫), মো. রিয়াজ হাওলাদার (২৪), মো. বাকের সরদার (৩০) ও মো. আবেদ আলী (৪৬)।
অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদক, দেশীয় অস্ত্র ও অন্যান্য অপরাধ সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারদের মধ্যে আলোচিত মাদক চক্রের নেত্রী শিল্পী বেগম এবং তার পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন।
সেনাবাহিনী সূত্র জানায়, কয়েক সপ্তাহ ধরে গুহলক্ষীপুর রেলওয়ে বস্তি এলাকায় চলমান মাদক পাচার, জোরপূর্বক দখলদারিত্ব এবং স্থানীয় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে একাধিক অভিযোগ আসছিল ফরিদপুর আর্মি ক্যাম্পে। বস্তির বাসিন্দা শিল্পী বেগম ও তার পরিবার এলাকায় একটি সুসংগঠিত মাদক নেটওয়ার্ক পরিচালনা করছে। যেখানে নারীদের ব্যবহার করে প্রকাশ্যে ইয়াবা, গাঁজা ও হেরোইন বিক্রি করা হচ্ছিল। যৌথবাহিনীর অনুসন্ধানে উঠে আসে, শিল্পীর সঙ্গে ভারতীয় মাদক পাচার চক্রের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে এবং ভারত থেকে গাঁজা এনে এই এলাকায় সরবরাহ করে একটি অবৈধ অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছিল।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, অভিযানে উদ্ধার মাদক ও অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- সাড়ে ৪৫ কেজি গাঁজা, ৩৩৭টি ইয়াবা ট্যাবলেট, ২১১টি হেরোইনের প্যাকেট, ২টি বিদেশি মদের বোতল, ৬১টি দেশীয় অস্ত্র, ৯টি ফিচার ফোন এবং ১০টি অ্যান্ড্রয়েড ফোন।
১৫ জনকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আসাদ উজ্জামান বলেন, নারীসহ গ্রেফতার ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Post a Comment