চোখের সাধারণ কিছু সমস্যায় করণীয়

 


চোখ দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এ অঙ্গে সাধারণত যে ধরনের অসুখ হয়, তার লক্ষণ এবং প্রতিকার নিয়ে সংক্ষেপে এখানে আলোচনা করা হলো


ডাবল ভিশন : এক চোখে ডাবল ভিশন হলে দেখতে হবে, চোখের ছানি পড়েছে কিনা। দুচোখেও ডাবল ভিশন হতে পারে। যেমনÑ চোখের এক বা একাধিক মাংসপেশির দুর্বলতা, কিছু বিশেষ ধরনের ব্রেইন টিউমার; কিছু ক্ষেত্রে পক্ষাঘাতের কারণে এমন হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দ্রুত চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে।


চোখ কাঁপা : ক্লান্তি, শরীরে লবণের ঘাটতি, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এমন হয়। আপনাআপনি কয়েক দিনের মধ্যে সমস্যাটি সেরে যায়। ১০-১৫ দিন পরও সমস্যা থেকে গেলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া প্রয়োজন।


চোখ বড় হয়ে ঠিকরে বেরিয়ে আসা : এটি হয় থাইরয়েডের সমস্যা হলে, চোখের পেছনে বা অপটিক নার্ভে টিউমার হলে। এমন হলে দ্রুত চক্ষুরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


বিড়াল চোখ : এ রোগে রোগীর চোখ অন্ধকারে বিড়ালের চোখের মতো জ্বলজ্বল করে। চোখ আকারে বড় হয়। শিশুরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। লক্ষণ বুঝলে ডাক্তার দেখাবেন।


চোখে আলোর ঝলকানি : চোখের সামনে থেকে থেকে আলোর ঝলক, কালো বিন্দু বা কালো ঝুলের মতো কিছু ঘুরে বেড়ায়। হওয়ার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলোÑ রেটিনা ডিটাচমেন্ট। এ ক্ষেত্রে চোখ পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। চিকিৎসককে সমস্যার কথা জানাতে হবে।


চোখের মণিতে সাদা দাগ : রোগটি হওয়ার কারণ হলো- কার্নিয়াল আলসার সেরে যাওয়ার পর অনেক সময় মণিতে সাদা দাগ থেকে যায়। চোখে আঘাত লাগলেও এ রকম হতে পারে। সাদা দাগ মণির একেবারে মাঝখানে হলে দৃষ্টিশক্তি থাকে না। একমাত্র কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করেই অবস্থা সামলানো যায়। মণির অন্যত্র সাদা দাগ থাকলে দেখতে কোনো অসুবিধা হয় না ঠিকই কিন্তু সৌন্দর্যে ঘাটতি হয়। সমস্যা সামলাতে দুটি রাস্তা খোলা আছেÑ রঙিন কনট্যাক্ট লেন্স এবং উল্কি। উল্কির রঙ বছর তিনেক থাকে। তারপর আবার রঙ করাতে হয়। তবে যা-ই করুন, চোখের ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করেই সব করতে হবে।


বয়স্কদের চশমা পরে আবছা দেখা : ছানি বা চোখের অন্য কোনো অসুখে এমন হচ্ছে কিনা, চিকিৎসককে দেখিয়ে নিশ্চিত হোন। চোখের অসুখ না থাকলে দৃষ্টিশক্তি কমার কারণ অপটিক নার্ভের জড়া। এ অবস্থায় পড়াশোনা করতে হলে ঘরে বেশি আলোর ব্যবস্থা করুন। পড়ুন আলোর দিকে পেছন ফিরে বসে। আতস কাচের সাহায্যে লেখা বড় করে নিতে পারেন। লাইনের ওপর স্কেল রেখে পড়লে সুবিধা হবে। চোখে কম দেখায় এ রোগে আক্রান্তরা মাঝে মধ্যে এখানে সেখানে পড়ে যান। এ জন্য সাবধান হতে হবে। যেমনÑ খাট, চেয়ার, সোফা ইত্যাদির উচ্চতা কমিয়ে ফেলুন। উচ্চতা এমন হবে, যাতে বসলে পা মাটিতে ঠেকে। সিঁড়ির এক পাশে সাদা রঙ করে দিলে সেদিকের রেলিং ধরে ওঠানামা করতে পারবেন।


চোখের নিচে কালি : আঘাত লেগে চোখের চারপাশ কালশিটে হতে পারে। চোখের অন্য সমস্যায় চোখের নিচে কালি পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য যাতে না হয় সে জন্য সবুজ শাকসবজি, পানি বেশি বেশি পান করতে হবে। মন দুশ্চিন্তামুক্ত রাখতে হবে। রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে হবে।


লেখক : চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন


চেম্বার : আইডিয়াল আই কেয়ার সেন্টার


৩৮/৩-৪, রিং রোড, শ্যামলী, ঢাকা


০১৮১৯২১২৭৪৯, ০১৯২০৯৬২৫১২

Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post