কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সরকারি সহায়তার (ভিজিএফ) কার্ডের অনলাইন আবেদন ও চাঁদা আদায় নিয়ে বিরোধের জের ধরে বিএনপির কর্মী আব্দুল আজিজ (৩৫) হত্যার ঘটনায় দলের আরেক কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার রাতে হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতপুর থানার ওসি নাজমুল হুদা।
জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম মাহাবুল মাস্টার (৫২)। র্যাব ও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। মাহাবুল মাস্টার মথুরাপুর কলেজপাড়া এলাকার মৃত মৌলা বক্সের ছেলে। তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। গত ১১ জুন অনুষ্ঠিত মথুরাপুর ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে ‘মোরগ’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি হেরে যান। এর আগে বুধবার (২ জুলাই) রাত ১০টায় উপজেলার মথুরাপুর স্কুল বাজারে ভিজিএফের কার্ড নিয়ে বিএনপির দুই কর্মীর দ্বন্দ্বের জেরে আব্দুল আজিজ নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
নিহত আব্দুল আজিজ (৩০) দৌলতপুর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের ইলু আলীর ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করতেন।কলেজপাড়া এলাকার রফিকুল আকরামের ছেলে। তিনি বিএনপির কর্মী।
স্থানীয়রা জানান, মথুরাপুর কলেজপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে পলাশের সঙ্গে আব্দুল আজিজের দীর্ঘদিন ধরে ভিজিএফ কার্ডের অনলাইন আবেদন ও চাঁদা আদায়কে ঘিরে বিরোধ চলছিল। ঘটনার রাতে আজিজ স্কুল বাজার এলাকায় অবস্থান করছিলেন। এ সময় পলাশের ছুরিকাঘাতে আজিজ গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলে পথেই তার মৃত্যু হয়। অভিযুক্ত পলাশ আটক মাহাবুল মাস্টারের ভাতিজা।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের পরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
থুরাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সুরাত আলী সেন্টু বলেন, মাহাবুল মাস্টার আমাদের রাজনৈতিক দলের সক্রিয় সদস্য এবং সাম্প্রতিক নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি কমিটির কোনো পদে নেই। তবে তাকে আটক করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নই।
দৌলতপুর থানার ওসি নাজমুল হুদা বলেন, ভিজিএফের কার্ডের অনলাইন আবেদন নিয়ে বিরোধ থেকেই এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। ঘটনার পরপরই র্যাব-পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে মাহাবুল মাস্টারকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে আজ আদালতের পাঠানো হয়েছে।
কুষ্টিয়া র্যাব-১২-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত সরকার বিজ্ঞপ্তিতে জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। গ্রেপ্তার মাহাবুল মাস্টারকে দৌলতপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

Post a Comment