চুলের আগা ফাটা সমস্যা দূর করতে করণীয়

 

নানা কারণে চুলের আগা ফেটে যায়। বিশেষ করে চুলে যখন পুষ্টির অভাব হয়, তখন অন্য অনেক সমস্যার মতো চুলের আগা ফাটা সমস্যাও দেখা দিতে পারে। চুলের আগা ফাটলে সেটা দেখতে যেমন খারাপ লাগে, তেমনি সেটা ক্রমাগত বাড়তে থাকে। এক সময় দেখা যায়, চুলের অনেকটাই ফাটা এবং অনুজ্জ্বল হয়ে পড়ে। তাই চুলের আগা ফাটা সমস্যা দেখা দিলে সেটা অবহেলা না করে সচেতন হতে হবে। প্রয়োজনে রূপ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সমস্যার সমাধান করতে হবে।


কিভাবে চুলের আগা ফাটা সমস্যা দূর করবেন, এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন কসমেটোলজিস্ট ও শোভন মেকওভার স্টুডিওর স্বত্তাধিকারী শোভন সাহা। চলুন জেনে নেই-


শোভন বলেন, চুলের আগা একবার ফেটে গেলে, তা স্বাভাবিক রূপে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় না। তাই চুলের যে অংশটুকু ফেটে গেছে, ওই অংশটুকু কেটে ফেলতে হয়। তারপর নিতে হয় প্রতিরোধের ব্যবস্থা। চুলের আগা ফাটার সবচেয়ে কার্যকর সমাধান হলো তেল। মাথার ত্বকে খুব ভালোমতো তেল ম্যাসাজ করতে হবে। প্রতিদিন শ্যাম্পু করা বাদ দিতে হবে। শ্যাম্পুর রাসায়নিক উপাদানও চুলের ক্ষতির কারণ। তাই সপ্তাহে দুই থেকে তিনবারের বেশি শ্যাম্পু করবেন না।


হট টাওয়েল ট্রিটমেন্ট


চুলের আগা ফাটা রোধ করার পাশাপাশি চুলের কোমলতা ধরে রাখতেও সাহায্য করে হট টাওয়েল ট্রিটমেন্ট। এটি করতে প্রথমে চুলে ভালো করে তেল লাগান। এরপর গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে পুরো মাথায় জড়িয়ে রাখুন ১০ মিনিট। এভাবে ৩-৪ বার করুন। এরপর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়েতেল ব্যবহার


চুলের আগা ফাটা সমস্যায় তেল খুব উপকারী। তেল চুলে পুষ্টির জোগান দেয়। এ ক্ষেত্রে আমরা সবাই সাধারণত নারিকেল তেল ব্যবহার করি। তবে জলপাই, বাদাম, তিলের তেলও উপকারী। চেষ্টা করুন সপ্তাহে অন্তত দুইদিন চুলে তেল দিতে।


আগা ছাঁটা


চুল ছোট হয়ে যাবে বলে অনেকেই চুল ছাঁটতে চান না। কিন্তু জানেন কী, নিয়মিত চুল ছাঁটলে চুল দ্রুত বাড়ে। চুলের আগা ফাটা রোধ করারও অন্যতম পদ্ধতি হলো নিয়মিত আগা ছাঁটা। চুলের আগা ছাঁটার নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। তা দক্ষ হাতেই করতে হবে। এ ধরনের হেয়ার কাটকে ‘স্পিটেন্ট কাট’ বলে। এ হেয়ার কাটে চুল ছোট হবে না, বরং চুলের পুরনো উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।


চায়ের লিকার


চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধ করতে ঠাণ্ডা চায়ের লিকারের জুড়ি নেই। একটি পাত্রে চায়ের লিকার নিয়ে চুলের আগা ডুবিয়ে রাখুন দশ মিনিটি। এরপর চুল ধুয়ে ফেলুন। 


লেবুর রস


সৌন্দর্য চর্চায় লেবুর রসের ব্যবহার নানাভাবে হয়। চুলে যত্নেও তা-ই। চুলের আগা ফাটা রোধ করতে ব্যবহার করুন লেবুর রস। লেবুর রসের সঙ্গে সমপরিমাণ পানি মেশান। এবার শুধু চুলের আগায় ভালো করে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। 


খাবার দাবার


প্রচুর প্রোটিনযুক্ত খাবার খান। খাদ্যে ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন ‘সি’ ও ‘ইঘরোয়া প্যাক


# একটি ডিমের কুসুম, তিন টেবিল চামচ অলিভ অয়েল ও এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে নিন। 


# সমপরিমাণ ক্যাস্টর অয়েল, অলিভ অয়েল ও সরিষার তেল ভালো করে মিশিয়ে নিন। খেয়াল রাখুন তিনটি তেল যেন একসঙ্গে মিশে যায়। মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ৫ মিনিট মাসাজ করুন। এভাবে সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহারে চুলের আগা ফাটা সমস্যা সমাধান হবে। 


যা করা উচিত নয়


# অনেকেই প্রতিদিন হেয়ার ড্রয়ার দিয়ে চুল শুকান। এতে চুল ধীরে ধীরে আর্দ্রতা হারায় এবং লাল হয়ে আগা ফেটে যায়। তাই হিট প্রটেক্টর ছাড়া হেয়ার ড্রায়ার ও ফ্ল্যাট আয়রন ব্যবহার করা উচিত নয়। 


# গোসলের পর অনেকের চুল ঝাড়ার অভ্যাস আছে। এতেও চুলের আগা ফাটে। 


# গরম পানি চুলে দেওয়া উচিত নয়। এতে চুলের তন্তুগুলো আস্তে আস্তে আর্দ্রতা হারিয়ে চুল ফাটা শুরু হয়।’ যেন অবশ্যই থাকে। ফেলুন।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post