মুখে অতিরিক্ত লোম গজানো অনেকের কাছেই এক বড় দুশ্চিন্তার কারণ। বিশেষ করে নারীদের এই সমস্যাটির বেশি মুখোমুখি হতে হয়। এর পেছনে মূলত দায়ী হরমোন অ্যান্ড্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি। কারো ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে এই সমস্যা দেখা দেয়, আবার কারো কাছে এটি হঠাৎ করেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে।চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও প্রতিদিনের খাবারে সামান্য কিছু বুদ্ধিদীপ্ত পরিবর্তন এনে প্রাকৃতিকভাবে এই সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। পুষ্টিবিদদের মতে, সাতটি সহজ খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে মুখের লোমের সমস্যার সমাধান সম্ভব।
নারীদের মুখে অতিরিক্ত লোম গজানোর অন্যতম কারণ হলো অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়া। অ্যান্ড্রোজেন মূলত পুরুষ হরমোন, যেমন টেস্টোস্টেরযখন শরীরে এর মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়, তখন তা চুলের রন্ধ্রকে উদ্দীপ্ত করে মোটা ও গাঢ় রঙের লোম জন্মাতে সাহায্য করে। এই অবস্থাকেই চিকিৎসা ভাষায় হিরসুটিজম বলা হয়।
শুধু তাই নয়, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা—যেমন পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওিএস), কিছু ওষুধের প্রভাব বা অন্যান্য অন্তঃস্রাবী রোগের কারণেও এই সমস্যা বাড়তে পারেঅতিরিক্ত মুখের লোম কমাতে সাতটি সহজ খাবার সম্পর্কে জেনে নিন—
স্পিয়ারমিন্ট চা
প্রতিদিন দুই কাপ স্পিয়ারমিন্ট চা খেলে শরীরে টেস্টোস্টেরন ও অ্যান্ড্রোজেনের মাত্রা কমে যায়।
এটি প্রাকৃতিকভাবে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং সারা বছর উপভোগ করার মতো সতেজ পানীয়।
সাইট্রাস ফল
কমলালেবু, মাল্টা, গ্রেপফ্রুট ইত্যাদি ভিটামিন–সি সমৃদ্ধ ফল ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ধীরে ধীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা হ্রাস করে। এ ছাড়া এগুলো ত্বক ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্যও দারুণ উপকারী।
দারচিনির পানি
খাবারের পর এক গ্লাস গরম দারচিনি মিশ্রিত পানি ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বাড়ায়। ফলে রক্তে চিনি নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং অ্যান্ড্রোজেনের মাত্রাএটি খাবার হজমেও সাহায্য করে।
কুমড়ার বীজ
জিংকসমৃদ্ধ কুমড়ার বীজ নিয়মিত খেলে টেস্টোস্টেরন বাড়ানোর এনজাইম বাধাগ্রস্ত হয়। সহজ ও স্বাস্থ্যকর এই স্ন্যাকস হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে। পাশাপাশি প্রোটিন ও ভালো ফ্যাটও জোগারান্না করা ক্রুসিফেরাস সবজি
ব্রোকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি ইত্যাদি রান্না করে খেলে শরীরে ইস্ট্রোজেন বিপাকক্রিয়া ভালোভাবে হয়। ফলে হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা পায়। হালকা ভাপে খেলে পুষ্টি ও স্বাদ দুটোই বজায় থাকে।
ভেজানো মেথি দানা
সকালে খালি পেটে ভেজানো মেথি দানা খেলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ে এবং অ্যান্ড্রোজেন কমে যায়। এটি প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত একটি কার্যকর উপায়।
হলুদ
হলুদের সক্রিয় উপাদান কারকিউমিন প্রদাহ কমায় এবং অ্যান্ড্রোজেনের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিদিনের খাবারে সামান্য হলুদ মেশালে ভেতর থেকে সুস্থতা বাড়ে এবং হরমোনের ভারসাম্য সচেতনভাবে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনলে তাৎক্ষণিক ফল না-ও মিলতে পারে। তবে সময়ের সঙ্গে এটি অতিরিক্ত মুখের লোম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং সামগ্রিকভাবে হরমোনের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সূত্র : আজকালবজায় থাকে।য়। সঠিক থাকে।।ন।
Post a Comment