Top News

যে ধরনের নাম রাখা ইসলামে নিষিদ্ধ

 

মানুষের জীবনে এমন কিছু জিনিস আছে, যেগুলোর প্রভাব সে প্রতিদিন অনুভব করে; তবে কখনো খুব একটা গুরুত্ব দিয়ে তা ভাবে না। এর মধ্যে একটি হলো নিজের নাম। প্রতিদিন, প্রতিটি মুহূর্তে মানুষ তার নাম শুনে, নামে সাড়া দেয়। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এই নামই তাকে পরিচিত করে তোলে। এমনকি মৃত্যুর পরও নামটিই রয়ে যায়, মানুষ তার নামেই তাকে স্মরণ করে।



আর শান্তি ও মানবতার ধর্ম ইসলামে নামের গুরুত্ব শুধু সামাজিক পরিচয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি আখিরাতের সঙ্গেও সম্পৃক্ত। হাদিসে বলা হয়েছে, কেয়ামতের দিন মানুষকে তার নাম ও পিতার নাম ধরে ডাকা হবে (আবু দাউদ)। ফলে, শিশুর নামকরণ কোনো সাধারণ বিষয় নয়; বরং এটি একটি ধর্মীয় ও নৈতিক দায়িত্বআধুনিক সময়ে অনেকেই না বুঝে বা ভুল ধারণায় এমন কিছু নাম সন্তানের জন্য বেছে নেন, যেগুলো ইসলামের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়—এমনকি হারাম পর্যন্ত। এ ধরনের নাম পরিহার করা যেমন জরুরি, তেমনি ভুলবশত রাখা হলে তা পরিবর্তন করাও গুরুত্বপূর্ণ।



চলুন, জেনে নিই ইসলামে নিষিদ্ধ কিছু না১. আল্লাহর জন্য বিশেষায়িত নাম রাখা



আল্লাহতায়ালার যেসব গুণবাচক নাম শুধু আল্লাহতায়ালার জন্যই বিশেষায়িত, সেসব নামে কোনো মানুষের নামকরণ করা হারাম। যেমন : আল্লাহ, আর-রহমান, আল-হাকাম, আল-খালেক ইত্যাদি নাম আল্লাহর জন্য বিশেষায়িত। এগুলো কখনোই মানুষের নাম হতে পারে না। তবে, এসব শব্দের সঙ্গে ‘আবদ’ বা ‘গোলাম’ শব্দ যুক্ত করে মানুষের নাম রাখা যেতে পারে। যেমন : আবদুর রহমান অর্থাৎ পরম দয়াময়ের বান্দা, আবদুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর বান্দা, আবদুল হাকাম অর্থাৎ মহাবিচারকের বান্দা এবং আবদুল খালেক অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার বান্দা।



২. আল্লাহর নাম ছাড়া অন্য কোনো শব্দের সঙ্গে ‘আবদ’ বা ‘গোলাম’ যুক্ত করে নাম রাখা



ইসলামের মৌলিক আকিদা বা বিশ্বাস অনুযায়ী মানুষ শুধু আল্লাহর বান্দা বা গোলাম। কোনো মানুষকে নবী, ওলি, ফেরেশতাসহ আল্লাহর যে কোনো সৃষ্টির বান্দা মনে করা বা কোনো সৃষ্টির বান্দা হিসেবে নিজের বা অন্য কোনো মানুষের পরিচয় দেওয়া হারাম। তাই আল্লাহর নাম নয় এমন কোনো নাম বা শব্দের সঙ্গে ‘গোলাম ’বা ‘আবদ’ শব্দ যুক্ত করে নাম রাখা ইসলামে কঠিনভাবে নিষিদ্ধ। হারাম। যেমন : আবদুশ শামস অর্থাৎ সূর্যের বান্দা, আবদুন নবী অর্থাৎ নবীর বান্দা,আবদুল ওজ্জা অর্থাৎ ওজ্জার বান্দা, গোলাম জিবরাইল অর্থাৎ জিবরাইলের বান্দা—এ জাতীয় নাম রাখা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম।



অনেক শব্দ আল্লাহর নাম না হলেও মানুষ আল্লাহর নাম মনে করে। যেমন : ‘মাবুদ’,‘মওজুদ’ ইত্যাদি। এসব শব্দের শুরুতেও ‘আবদ’ বা ‘গোলাম’ যুক্ত করে নাম রাখা থেকে বিরত থাকতে হবে।



৩. শুধু আল্লাহর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে এমন গুণবাচক নাম রাখা



শুধু আল্লাহর জন্য প্রযোজ্য হতে পারে এমন গুণবাচক নাম রাখাও নিষিদ্ধ। যেমন : শাহেনশাহ অর্থাৎ জগতের বাদশাহ বা মালিকুল মুলক অর্থাৎ রাজাধিরাজ ইত্যাদি নাম রাখা নিষিদ্ধ।



শিশুর প্রতি বাবা-মায়ের অন্যতম কর্তব্য হলো তার সঠিক ও সুন্দর অর্থবোধক নাম রাখা। সুতরাং এ বিষয়ে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। হাদিস শরিফে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ও আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-



من حق الولد على الوالد أن يحسن اسمه ويحسن أدبه.



অর্থ : সন্তানের সুন্দর নাম রাখা ও তার উত্তম তারবিয়াতের ব্যবস্থা করা বাবার ওপর সন্তানের হক। (মুসনাদে বাযযার : ৮৫৪০)ম—।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post