time
Welcome to Our Website!

Top News

স্বামী-স্ত্রীর হক

 


সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্ষুদ্র অংশ হচ্ছে পরিবার। আর এই পরিবার গঠিত হয় স্বামী-স্ত্রীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। সমাজ ও রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে যেমন আইন-নীতিমালার প্রয়োজন হয় তেমনই স্বামী-স্ত্রীর বাঁধানো ছোটো সংসারে নৈতিক বিষয়াবলী থাকা প্রয়োজন।স্বামী-স্ত্রীর হক নিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নারীদের তেমনি ন্যায়সঙ্গত অধিকার রয়েছে যেমন তাদের ওপর পুরুষদের হক রয়েছে।’ (সুরা আল বাকারাহ-২২৮) 

 



স্বামীর হক

 

দাম্পত্যজীবন সুখকর ও আনন্দঘন করার জন্য স্ত্রীর ওপর স্বামীর কিছু হক রয়েছে। যথা,



সতীত্ব রক্ষা করা



সুসন্তান লাভ ও পারিবারিক সুখ-শান্তি স্ত্রীর সতীত্ব, চারিত্রিক দৃঢ়তা ও পবিত্রতার ওপর নির্ভরশীল। একজন সতীসাধ্বী স্ত্রী স্বামীর জন্য বড় নিয়ামত। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘পৃথিবীর সবকিছু উপভোগের জিনিস, তবে পৃথিবীর উপভোগের জিনিসের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হলো সতীসাধ্বী স্ত্রী। সুতরাং স্ত্রীর স্বীয় সতীত্ব রক্ষা করা আবশ্যক।



আনুগত্যশীলা হওয়া



স্ত্রীকে অবশ্যই স্বামীর আনুগত্যশীলা হতে হবে। পারিবারিক ব্যবস্থাপনা সঠিক ও সুন্দর রাখার জন্য স্বামীর আনুগত্য করা স্ত্রীর জন্য আবশ্যক। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমি যদি কাউকে সিজদা করার হুকুম করতাম তাহলে স্ত্রীকে আদেশ করতাম তার স্বামীকে সিজদা করার।’ (জামে তিরমিজি, রিয়াদুস সালেহিন, পৃষ্ঠা-১৪২)



আমানতের হিফাজত করা



স্বামীর আমানতের হিফাজত করা স্ত্রীর অন্যতম কর্তব্য। যেমন- ধনসম্পদ, সতীত্ব, ইজ্জত-আব্রু, স্বামীর গোপনীয় বিষয়, কথাবার্তা, অঙ্গীকার প্রভৃতি রক্ষণাবেক্ষণ করা স্ত্রীর দায়িত্ব। 



হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, মহানবী (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে যে, কোন নারী উত্তম? মহানবী (সা.) প্রত্যুত্তরে বলেন, ‘যে নারীর প্রতি স্বামী নজর করলে সে স্বামীকে আনন্দ দান করে, স্বামীর কথামতো চলে, নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপারে স্বামীর বিরুদ্ধাচরণ করে না এবং স্বামীর মতের বিরুদ্ধে তার সম্পদ ব্যয় করে না।’ স্ত্রীর হক

 

স্ত্রীর যেমন স্বামীর প্রতি দায়িত্ব রয়েছে তদ্রুপ স্বামীরও স্ত্রীর প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। স্বামীর প্রতি স্ত্রীর হক হলো-



সদাচরণ করা



আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘আর (হে স্বামীরা) তোমরা তাদের (স্ত্রীদের) সাথে সৎভাবে জীবন-যাপন করবে।’ (সূরা নিসা-১৯) 



মহানবী (সা.) বলেন, ‘সাবধান! তোমরা স্ত্রীদের সাথে সদাচরণ রক্ষা করে চলবে। কারণ তারা তোমাদের সাহায্যকারী। তোমরা তাদের মালিক নও। তারা তোমাদের স্পষ্ট অবাধ্যতা অবলম্বনের আগে তাদের ওপর কঠোরতা আরোপের কোনো অধিকার তোমাদের নেই। সাবধান! তোমাদের ওপর তোমাদের স্ত্রীদের হক রয়েছে। তোমাদের ওপর তাদের পাওনা হক হলো- তোমরা তাদেরকে সুন্দররূপে পানাহার ও পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যবস্থা করবে।’ (জামে তিরমিজি, রিয়াদুস সালেহিন, পৃষ্ঠা-১৩৯)যদি স্ত্রীর কোনো অভ্যাস কিংবা আচরণ অপছন্দ হয় অথবা সুন্দর না হয় তবে ধৈর্য ধারণ ও সহনশীল হতে হবে। স্ত্রীর অন্যায় ও অশুভ আচরণ ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে হবে। সামান্য ভুলত্রুটির কারণে তালাক বা সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত হবে না। 



রসুল (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুমিন স্বামী মুমিন স্ত্রীকে ঘৃণা করতে পারে না। যদি তার একটি অভ্যাস অপছন্দ হলেও অন্য আরেকটি পছন্দ হয় এবং তাকে খুশি করে।’ (মুসলিম) 



ক্ষমার দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা 



আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মু’মিনরা! তোমাদের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে কেউ কেউ তোমাদের শত্রু। অতএব তাদের সম্পর্কে তোমরা সতর্ক থাকো। তোমরা যদি তাদেরকে মার্জনা করে দাও, তাদের দোষত্রুটি উপেক্ষা করো এবং তাদেরকে ক্ষমা করো, তবে জেনে রাখো, আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।’ (সূরা তাগাবুন-১৪) 



মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে পরিপূর্ণ ইমানের অধিকারী তারা, যারা তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ চরিত্রবান এবং তোমাদের মধ্যে উত্তম মানুষ তারা, যারা স্বীয় স্ত্রীদের দৃষ্টিতে উত্তম বলে বিবেচিত।’ (জামে বিদায় হজের ভাষণে মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। কেননা তোমরা আল্লাহর আমানতস্বরূপ তাদেরকে গ্রহণ করেছ এবং আল্লাহর বাণীর মাধ্যমে তাদের যৌনাঙ্গের বৈধতা লাভ করেছ। তোমাদের জন্য তাদের দায়িত্ব হলো তারা তোমাদের বিছানায় এমন কাউকে স্থান দেবে না, যা তোমরা অপছন্দ করো। যদি তারা এরূপ করে, তবে তাদেরকে হালকা প্রহার করো। আর তোমরা যথাযথভাবে তাদের অন্ন, বস্ত্র প্রদান করবে।’ 



জনৈক সাহাবি মহানবী (সা.)-কে প্রশ্ন করেন, আমাদের ওপর স্ত্রীদের হক কী? রসুল (সা.) বলেন, ‘তুমি খেলে তাকেও খাওয়াবে, তুমি পরিধান করলে তাকেও পরিধান করাবে। চেহারায় প্রহার করবে না এবং ঘরে রাখবে, ঘর থেকে বের করবে না।’ 



রসুল (সা.) আরো বলেছেন, ‘স্ত্রীদেরকে প্রহার করবে না। যারা স্ত্রীদেরকে প্রহার করে তারা ভালো স্বভাবের মানুষ নয়।’ (আবু দাউদ) মহানবী (সা.) অপর হাদিসে বলেছেন, ‘যদি কারো দুজন স্ত্রী থাকে এবং তাদের প্রতি ন্যায়বিচার না করে, তবে সে বিচার দিন অর্ধদেহ হয়ে উঠবে।’ (তিরমিজি)তিরমিজি-২৮৩)



ধৈর্যধারণ(সুনানে নাসায়ি, পৃষ্ঠা-১৪২)

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post