বাবাকে লোহার স্ট্যান্ড দিয়ে পিটিয়ে ব্রাশফায়ার করা হয়

 বাবাকে লোহার স্ট্যান্ড দিয়ে পিটিয়ে ব্রাশফায়ার করা হয়

ডিজির নির্দেশে আমার বাবা উচ্ছৃঙ্খল বিডিআর সদস্যদের থামানোর প্রাণপণ চেষ্টা করেন। উনি চেষ্টা করার কারণে বিডিআর সদস্যরা উনাকে লোহার স্ট্যান্ড দিয়ে পিটিয়ে পরে ব্রাশফায়ার করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তাকে হত্যা করে এরপর লাশ গণকবরে দেওয়া হয়।’

এভাবেই বলছিলেন পিলখানায় নিহত সুবেদার মেজর নুরুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল আলম। স্মৃতিচারণ করছিলেন ২০০৯ সালের সে দিনের। বাবাকে খুঁজে বেড়ানোর দিনগুলো দুঃসহ স্মৃতি হয়ে এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় তাঁকে। বিডিআর হত্যা মামলার পুনঃতদন্ত চায় শহীদ পরিবার। সে দিনের দুর্বিষহ স্মৃতি স্মরণ করে স্বজনরা আশা প্রকাশ করেন, স্বাধীন কমিশনের প্রতিবেদনে এ হত্যাকাণ্ডের আসল কুশীলবদের নাম উঠে আসবে। দ্রুত তাদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি শহীদের স্বজনদের। সুবেদার মেজর নুরুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল আলম হান্নান বলেন, ‘সম্ভাব্য যতগুলো জায়গা আছে বা যে যেভাবে বলেছেন, আমরা প্রতিটি জায়গায় খোঁজ করেছি। পাইনি তাকে।’ 

মাস্টারমাইন্ডদের চিহ্নিত করতে স্বাধীন কমিশন নিয়ে আশাবাদী আশরাফুল। ২৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শহীদ সেনা দিবস ঘোষণায় খুশি তিনি। সুবেদার মেজর নুরুল ইসলামের ছেলে বলেন, ‘বাবাকে শুধু একটা শহীদি সম্মান নয়, রাষ্ট্রীয়ভাবে যেন তাকে সম্মান বা খেতাব দেওয়া হয়। আমরা আশাবাদী, এই তদন্ত কমিশন তাদের বিশ্লেষণ বা তদন্তের মাধ্যমে এতে জড়িত দেশি-বিদেশি ও রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের বের করে বিচারের কাঠগড়ায় তুলবে।’

হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পর বাবার মরদেহ দেখেন শহীদ কর্নেল কুদরত এলাহীর ছেলে সাকিব রহমান। কুশীলবদের খুঁজে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি তাঁর। তিনি বলেন, ‘হত্যা মামলায় আসলে ট্রায়ালের ভেতর চাইলেও তদন্ত কমিশন ঢুকতে পারবে না। তবে, শহীদ পরিবারের বক্তব্য হচ্ছে, যদি সম্ভব হয় তাহলে পুনরায় এ ব্যাপারে তদন্ত হোক। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে আইনের ঊর্ধ্বে গিয়ে যেন তাদের বের করে দেওয়া না হয়।’ 

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিদ্রোহের নামে হত্যা করা হয় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে। মরদেহ গুম করতে ড্রেনে ফেলে দেওয়া হয়, ঘটে গণকবর দেওয়ার মতো ঘটনাও। 

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post