Welcome to Our Website!

পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধনে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতাদের একাত্মতা

 


সিলেটে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর শীর্ষ স্থানীয় নেতারা। মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে অংশগ্রহণকারীরা নগরীতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।


'সিলেট জেলা পাথরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ' ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়।


এতে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, জামায়াতের মহানগর আমির মো. ফখরুল ইসলাম, জেলা সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন এবং এনসিপির জেলা প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দিন ও মহানগর প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাদেক মো. খায়রুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।

তাঁরা কোয়ারি পুনরায় চালুর দাবি জানিয়ে বলেন, এসব পাথর খনির ওপর নির্ভর করেই সিলেট অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের জীবিকা নির্বাহ হয়। বর্তমানে এসব কোয়ারি বন্ধ থাকায় শ্রমজীবী মানুষ চরম সংকটে পড়েছেন।


এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিএনপি নেতা রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, যে ব্যবসার ওপর দাঁড়িয়ে ১০ লাখ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করত, যে পাথর কোয়ারি অত্র জনপদের মানুষ তাদের কাছে একটি পবিত্র আমানত হিসেবে মনে করত, সেই পাথর কোয়ারি বন্ধ করে দিয়ে ১০ লাখ মানুষের পেটে লাথি মারা হয়েছে।


আমাদের সেই সীমান্তবর্তী এলাকার মধ্যে ১০০ গজ দূরবর্তী জায়গায় পাহাড়-টিলা ধ্বংস করে ডিনামাইট ফাটিয়ে পাথর ভেঙে সেই পাথর বাংলাদেশে এলসির মাধ্যমে নিয়ে আসা হচ্ছে। সেই এলসি কাদের স্বার্থে করা হয়েছে, এটি আমাদের ভেবে দেখতে হবে।

এ বিষয়ে মত প্রকাশ করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী কিম। তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময়ে সিলেটের পাথর লুটের নেপথ্যে ছিলেন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা।


৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ লুটপাটের সুযোগ হারালেও লুট অব্যাহত আছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সিলেটের পাথর–রাজ্য লুটপাটে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১০ মাসে হাজার কোটি টাকার পাথর লুটের অভিযোগ উঠেছে।

জামায়াত নেতা ফখরুল ইসলাম বলেন, পরিবেশের দোহাই দিয়ে পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখা হলেও এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার।


সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৫১টি পাথর কোয়ারির মধ্যে ১৭টির ইজারা বর্তমানে স্থগিত রয়েছে, যার বেশিরভাগই সিলেট জেলায় অবস্থিত। পরিবেশ সুরক্ষার স্বার্থে এগুলোতে নতুন করে ইজারা দেওয়া হবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকেগত ১৪ জুন জাফলং সফরে গিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এ ঘোষণা দেন।

এদিকে নেতারা জানান, দাবি আদায়ে ২৮ জুন থেকে ৪৮ ঘণ্টার লোড-আনলোডে কর্মবিরতি, ৩০ জুন থেকে জেলায় সব পণ্য পরিবহনে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি এবং ২ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব পণ্য পরিবহন ও গণপরিবহন বন্ধ রাখার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।


সিলেট বিভাগে পাঁচটি কোয়ারির ইজারা স্থগিত রয়েছে উল্লেখ করে বক্তারা কর্মসূচিতে এসব দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবি জানান। এ সময় দ্রুত কোয়ারি খুলে দেওয়া এবং ট্রাকশ্রমিকদের গাড়ি তল্লাশির নামে হয়রানি, সিলেটের ক্রাশার মিলের মালিকদের হয়রানি বন্ধ করে ব্যবসার সুযোগ দিতে আবারও মিটার ফেরত দেওয়ার দাবি জানানো হয়।


কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের বিষয়ে মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান বলেন, ‘প্রকৃতি ও পরিবেশ বিনষ্ট করে পাথর উত্তোলন হোক, এটা আমরাও চাই না। আমরা চাই প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হোক।


বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি সিলেট বিভাগের সমন্বয়ক শাহ সাহেদা আখতার বলেন, এটি একটি পরিবেশগত ও আইনি বিষয়। এখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ দুঃখজনক। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক নেতারা মাঠে নামছেন, যা অনাকাঙ্ক্ষিত। জানানো হয়েছে।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post