ভোলা থেকে ঢাকাগামী লঞ্চ থেকে পড়ে এক কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা, না-কি তাকে ফেলে দেওয়া হয়েছে—এ নিয়ে তৈরি হয়েছে সন্দেহ। নিহত ছাত্রীর মা বলছেন, ‘আমার মেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করার মতো না। আমরা সত্য জানতে চাই।ভোলা সরকারি কলেজের তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী ১৭ জুন ভোলা থেকে ঢাকাগামী কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ থেকে মেঘনায় পড়ে যান। চার দিন পর ২০ জুন লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীরহাট ঘাট এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। শরীরে কালো দাগ ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহতের মা বলেন, ‘ওই দিন সকালে প্রাইভেট পড়াতে বের হয়েছিসাড়ে ১১টার মধ্যে বাসায় ফেরার কথা। দুপুরের পর থেকে ফোন ধরেনি। আমরা ওর খোঁজে স্কুল, কলেজ, বান্ধবীদের বাসা ঘুরে ফিরেও পাইনি। চার দিন পর জানতে পারি লঞ্চ থেকে একটি মেয়ে নদীতে পড়ে গেছে।
পরে ছবিতে দেখে নিশ্চিত হই—সেটি আমার মেয়ে।’
ছাত্রীর পরিবার জানায়, দেড় বছর আগে মেয়ের বিয়ে হয়েছিল। ছয় মাস আগে স্বামী পোস্ট অফিসের মাধ্যমে তালাক পাঠায়। এ নিয়ে ছেলেপক্ষের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা চলছে। মেয়ের বাবা একজন অটোরিকশাচালতিন সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করতে দিনরাত পরিশ্রম করতেন।
ছাত্রীর মৃত্যু ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে কলেজ শাখা ছাত্রদল। আজ মঙ্গলবার কলেজের সামনে তারা মানববন্ধন করে সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেছে।
লঞ্চের মাস্টার মোবারক হোসেন জানান, ১৭ জুন সকাল ১০টায় লঞ্চটি ভোলা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছাড়ে। বেলা পৌনে ১১টার দিকে তিন তলার ছাদ থেকে ওই ছাত্রী ঝাঁপ দেন বলে দাবি। লঞ্চ থামিয়ে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশকে জানানো হয়।
মজুচৌধুরীরহাট নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আজিজুল হক জানান, মরদেহ উদ্ধারের সময় শরীরে কালো দাগ ছিল। পরিচয় না পাওয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। পরে পরিবার ছবি দেখে শনাক্ত করে।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ওসি মো. আবদুল মোন্নাফ বলেন, ‘এ ঘটনায় নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি।’
নিহতের মা বলেন, ‘আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্ত হোক। কীভাবে মারা গেল—আমরা সেটা জানতে চাই। যদি কেউ এর সঙ্গে জড়িত থাকে, তার শাস্তি হোক।’ক।ল।
Post a Comment