দেশে ফিরতে চান রোহিঙ্গারা, নিচ্ছেন লড়াইয়ের প্রস্তুতি

 


বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে আশ্রিত রোহিঙ্গা তরুণদের অনেকে ‘যুদ্ধ’ করতে প্রস্তুত। নিজ দেশে ফেরার প্রশ্নে স্বাধীন অঞ্চল প্রতিষ্ঠার স্বপ্নও দেখছেন তারা।


বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে গত এক-দেড় বছরের মধ্যে এমন চিন্তাভাবনা ও মানসিকতা তৈরি হয়েছে।


রোহিঙ্গা শিবিরে তাদের অনেকের সাথে কথা বলে এমন ধারণা পাওয়া গেছে।


কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে একজন রোহিঙ্গা যুবক বলেন, ‘আমরা এদিকে থাকবো না। আমরা মিয়ানমারে চলে যাবো। প্রয়োজনে যুদ্ধ করে হলেও ওইটা নিয়া আমরা স্বাধীন করে নিজের চিন্তাভাবনা আরও স্পষ্ট করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ করবো। আরাকান আর্মির সাথে। আমরা স্বাধীন (স্বাধীনতা) চাই।’


উখিয়া ক্যাম্পে আরেকজন যুবক বলেন, ‘আমাদেরকে যুদ্ধ করে নিজ দেশে স্বাধীনতা অর্জন করতে বলতেছে আরকি। সবাই জিহাদ করার জন্য প্রস্তুত। এটার জন্য সবাই একতালে আরসা, আরএসও- দুই দলই মিলে ভালো কাজ করছে।’


ক্যাম্পে সাধারণ রোহিঙ্গা এবং বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ আছে এমন রোহিঙ্গারা স্বীকার করেছেন যে, ক্যাম্পে অন্তত চারটি সংগঠন ‘সশস্ত্র বিদ্রোহ’, ‘জিহাদ’ বা ‘যুদ্ধের’ জন্য উদ্বুদ্ধ করার তৎপরতায় লিপ্ত আছে।


এসব বিষয়ে বিভিন্ন ক্যাম্পে নিয়মিত ঘরোয় বৈঠক এবং আলাপ আলোচনা হয়।


গোষ্ঠীগুলো হলো আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা), রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও), ইসলামিক মাহাজ এবং আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ)।


কক্সবাজারে সরেজমিনে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে এবং রোহিঙ্গাদের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ক্যাম্পে নিয়মিত এসব বিষয়ে বৈঠক ও আলোচনা হয়।


সাধারণ রোহিঙ্গারা বলছেন, এই সংগঠনগুলো বিভিন্ন সময় মিটিং করে তাদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছে এবং মিয়ানমারের আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে একটা ঐক্যবদ্ধ অবস্থান তৈরিরও প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।


কুতুপালং ক্যাম্পে একজন রোহিঙ্গা বলেন, বৈঠকে নিজেদের মধ্যে সংঘাতে লিপ্ত না হওয়ার বিষয় এবং নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়। সবাইকে সচেতন করা হয়।


‘প্রতি জায়গায় জায়গায় মিটিং করে। মিটিংয়ে এটা বলে যে, আমাদের যে অধিকার, যদি সঠিকভাবে পাই, নিরাপত্তার ভিতরে থাকতে পারি, আমরা মিয়ানমারে চলে যাব। মিটিংয়ের মাঝে বলে যে এটা আমাদের দেশ না। এখানে কোনো ঝগড়া চলবে না। সবাই একমতে থাকবে। কোনো চুরি, ডাকাতি, মানুষ খুন করাকরি অন্য কোনোকিছুআইসিজির প্রতিবেদন এবং উদ্বেগ


বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে স্বশস্ত্র বিদ্রোহ করতে পারে- এমন আশঙ্কা করে সম্প্রতি এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ আইসিজি।


রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো নিজেদের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব স্থগিত করেছে এবং নতুন করে সদস্য নিয়োগ বাড়িয়েছে।


সক্রিয় গোষ্ঠীগুলো ধর্মীয় ভাষা ব্যবহার করে শরণার্থীদের রাখাইনে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করছে বলেও উল্লেখ রয়েছে আইসিজির প্রতিতিন বলেন, ‘আমরা সবাই আমরা চাই, সবাই একমত হয়েছি যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শুধু যেন হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাকটিভিটিজটা যেন আমরা করতে পারি। এই ধরনের স্বশস্ত্র গ্রুপ তাদের একটিভিটিজ যেন কোনোভাবেই না করতে দেয়া হয়। এগুলো বরদাশত করা হবে না।’


এপিবিএন এর কর্মকর্তা প্রলয় সিসিন বলেন, ‘আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই স্বশস্ত্র গ্রুপ যেন কোনোভাবেই আইনশৃঙ্খলা বিনষ্ট করতে না পারে। আমরা ২৪/৭ (সার্বক্ষণিক) কাজ করছি। আমাদের পুরোপুরি আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের নিয়ন্ত্রণে আছে। ক্যাম্পে অস্ত্র উদ্ধার আমরা বিভিন্ন সময়ে করেছি এটা চলমান আছে। যারা অপরাধী তাদের কাছে অস্ত্র আছে। আমরা গ্রেফতার করছি। উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে হ্যান্ডমেইড, অটোমেটিক বা এসএমজি টাইপেরও আছে। আমরা চেষ্টা করছি এ ব্যাপারে যারা তদন্ত করছে দেখছে কোথা থেকে কীভাবে এগুলো এসেছে’, বলেন প্রলয় সিসিন।বেদনে। এখানে চলবে না।থাকব।’

Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post