আমরা রোজ খাবার খাই। খাবার খেয়েই আমাদের বাঁচতে হয়। জীবন ধারণ করতে হয়। তবে, আমাদের খাবারের ক্ষেত্রে অনেক অনিয়ম হয়। যে কারণে মাঝে মাঝে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কারও কারও আবার গুরুতর অবস্থা তৈরি হয়। তাই সুস্থ ও নির্মল জীবনযাপনে খাবারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে বলেছে ইসলাম। দিয়েছে সুন্দর নির্দেশনাও। হাদিসে বলা হয়েছে, সঠিক নিয়ম মেনে খাবার খেলে এটাও ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়। পুণ্য দান করা হয়।
সাধারণত বাঙালিরা কেউ ৩ বেলা, কেউ ২ বেলা খাবার খান। অর্থাৎ অনেকে সকালে ভারী খাবার গ্রহণ করেন, আবার কেউ কেউ হালকা নাশতাতে সকাল পার করেন। তবে, নিঃসন্দেহে দুপুর এবং রাতে প্রত্যেকেই ভাত কিংবা অন্যকোনো ভারী খাবার গ্রহণ করেন। আর ইসলামে রাতের খাবারের গুরুত্ব অনেক। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রাতের আহার ত্যাগ কোরো না, যদি তা এক মুঠো খেজুরও হয়। কারণ রাতের আহার ত্যাগ মানুষকে বৃদ্ধ করে দেয় (ইবনে মাজাহ : ৩৩৫৫, তিরমিজি : ১৮৫এখন প্রশ্ন হলো রাতের খাবারের সঠিক সময় কোনটি? এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, রাতের খাবার গ্রহণের জন্য উপযুক্ত সময় হচ্ছে রাতের প্রথম প্রহরের সূচনা।
চিকিৎসকদের দাবি, শারীরিক সুস্থতার প্রশ্নে একজন মানুষকে অবশ্যই রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে রাতের খাবার গ্রহণ করা উচিত। এরপর কিছুতেই কোনো ধরনের ভারী খাদ্য গ্রহণ করা যাবে আবার কোনো কোনো গবেষক চিকিৎসক মন্তব্য করেছেন যে, রাতে ঘুমানোর অন্তত ২ ঘণ্টা আগে অবশ্যই রাতের খাদ্য গ্রহণ করে নেওয়া উচিত। কারণ, খাদ্য গ্রহণের পর তা আস্তে আস্তে পেট থেকে ছোট অন্ত্রের দিকে চলে যায় এবং ক্রমান্বয়ে হজমের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। এতে বুক জ্বালা ও অনিদ্রার মতো সমস্যা তৈরি হয় না। আর খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে শুতে গেলে সেসব খাবার মানবদেহ যথাযথ প্রক্রিয়াকরণ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয় না। ফলে আমাদের শরীরে নানাবিধ অসুস্থতা দেখা দেয়।
চিকিৎসকদের বলা এসব বিষয়ের সন্ধান আমরা নবীজীবনেও খুঁজে পাই। কারণ অসংখ্য হাদিস এমন আছে, যেগুলো রাতের খাবার এশার নামাজের আগে বা সঙ্গে সঙ্গেই সেরে নিতে তিনি উদ্বুদ্ধ করেছেন। যেমন, ইমাম বুখারি (রহ.) তার গ্রন্থে ‘রাতের খাবার পরিবেশন করা হলে তা রেখে অন্য কাজে ত্বরা করবে না’ শিরোনামে একটি অধ্যায়ই নিয়ে এসেছেন। সেখানে তিনি আয়েশা (রা.)-এর সূত্রে নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, যখন নামাজের (এশার) ইকামত দেওয়া হয় এবং রাতের খাবারও উপস্থিত হয়ে যায়, তাহলে তোমরা আগে আহার করে নেবে (বুখারি : ৫০৬৯)।
এই হাদিস ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষ্য অনুযায়ী, রাতের খাবার অবশ্যই সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাতের সূচনার পরপরই সেরে নেওয়া অধিক নিরাপদ।না।৬)।
Post a Comment