বাগেরহাটের রামপালে ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। রবিবার (৩ আগস্ট) বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা। এসময় প্রতিপক্ষের লোকজনকে মারধরের পাশাপাশি উপজেলার সন্ন্যাসী বাজারের অন্তত ২০টি দোকান ও পাশের কয়েকটি বসতবাড়ী ভাঙচুর করা হয়েছে।বিএনপির নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রামপাল উপজেলার মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কয়েক মাস ধরে দুই সভাপতি প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছিল। বিভিন্ন সময় উভপক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
শনিবার (২ আগস্ট) রাতে ইউনিয়নের বেতবুনিয়া পাকা রাস্তার মাথায় মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল আলিমের লোকজন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকসহ ১১ জনকে মারধর করেন। ওই রাতেই আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হমারধররের প্রতিবাদ ও হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে রবিবার (৩ আগস্ট) বিকেলে আব্দুল আলিমের প্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকের লোকজন পুলিশের অনুমতিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভের আয়োজন করেন। এসময় মানববন্ধনের জন্য জড়ো হলে আব্দুল আলিম হাওলাদারের লোকজন অতর্কিতভাবে সাজারুল ইসলাম সাজু ও তার লোকজনের ওপর হামলা করে। এতে সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজুসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। এই হামলার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে সাজারুল ইসলাম সাজু ও তার লোকজন আব্দুল আলিমের লোকজনের ওপর হামলা করে।এসময় তারা আব্দুল আলিমের বসতবাড়ি, সন্ন্যাসী বাজারের ২০টি দোকান ভাঙচুর করে।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সন্ন্যাসী বাজারে দেখা যায়, পুলিশের সামনেই সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু, সাবেক যুবদল নেতা জাহিদুল ইসলাম ও তার লোকজন দফায় দফায় আব্দুল আলিমের লোকজনকে ধাওয়া করে এবং মারধরের চেষ্টা করছে। বাজারের বিভিন্ন দোকান ভাঙচুর করছেন। আর বাজারের পাশে থাকা দুটি ভবনের ছাদ থেকে সাজুর লোকদের ওপর ইট ছুড়ছেন আব্দুল আলিম হাওলাদারের লোকজন। পুলিশ থামানোর চেষ্টা করলেও ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা থামছে নাকিছুক্ষণ পরে রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। কয়েক মিনিটের জন্য শান্ত হলেও পরক্ষণে পুলিশের সামনেই আবারও লাঠিসোটা নিয়ে দোকান ও পাশে থাকা আব্দুল আলিমের বসতবাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে আরো পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে। সন্ধ্যার আগমুহূর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানান, রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি) মো. আতিকুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি পরিস্থিতি শান্ত রাখতে। উভয়পক্ষ ইট-পাটকেল ছুড়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা তাদেরকে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছি।
সাবেক যুবদল নেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকের বিপুল জনপ্রিয়তা দেখে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি প্রার্থী নিজেদের ভরাডুবি ভেবে নির্বাচন বানচাল করার জন্য আমাদের লোকদের ওপর হামলা করে। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সাবেক ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মিঠু ও মজনুর নেতৃত্বে এই হামলা হয়।
মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, পুলিশ আসছিল রামপাল থানা থেকে। পুলিশের সামনেই আব্দুল আলিমের লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছে।
সংঘর্ষে আহত ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি প্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদারের লোকজন আমাদের হামলা করে। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমরা চেয়েছিলাম শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করতে কিন্তু তারা অতর্কিতভাবে আমাদের ওপর হামলা করে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সভাপতি প্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদারকে বার বার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।।য়।
Post a Comment