বর্তমানে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। বিশ্বজুড়ে লাখো মানুষ হার্ট অ্যাটাক ও হৃদরোগজনিত জটিলতায় প্রাণ হারাচ্ছেন। গবেষণা বলছে, হৃদরোগ এখন বৈশ্বিক মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে বয়স্কদের মধ্যে এর প্রবণতা বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হৃদরোগের পেছনে যেমন রয়েছে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস, তেমনি রয়েছে কিছু প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব। গবেষণায় উঠে এসেছে, ভিটামিন কে১ (ফাইলোকুইনোন) হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। মূলত সবুজ শাক-সবজিতে পাওয়া এই ভিটামিন ধমনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
সম্প্রতি দ্য আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন (২০২৫) এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, ভিটামিন কে১ ধমনীতে ক্যালসিয়াম জমার হার কমিয়ে দেয়, যা হৃদরোগের একটি মূল কাগবেষণাটি ১৪ বছর ধরে পরিচালিত হয় এবং এতে অংশ নেন ৭০ বছরের বেশি বয়সী ১৪৩৫ জন ব্যক্তি। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন পর্যাপ্ত ভিটামিন কে১ গ্রহণ করেন, তাঁদের হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি ৪৩ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
ভিটামিন কে১ শরীরে থাকা ম্যাট্রিক্স জিএলএ প্রোটিন সক্রিয় করতে সহায়তা করে, যা ধমনীতে ক্যালসিয়াম জমতে বাধা দেয়। এই ক্যালসিয়াম জমাট বাঁধতে শুরু করলে তৈরি হয় এথেরোস্ক্লেরোটিক প্লেক, যা করোনারি আর্টারি ডিজিজ এবং স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।
ভিটামিন কে১ এর উৎস
ভিটামিন কে১ পাওয়া যায় মূলত সবুজ শাক-সবজি থেকে। যেমন:
*পালং শাক
*ব্রকলি
*বাঁধাকপি
*শালগম শাক
*লেটুস
*কলার মোচা
এছাড়া আঙুর, ব্লুবেরি, অ্যাভোকাডো, কিউই-এর মতো ফলে এবং সয়াবিন, জলপাই, ক্যানোলা তেলের মতো উদ্ভিজ্জ তেলেও অল্প পরিমাণে এই ভিটামিন থাকে। কিছু শস্য ও দুগ্ধজাত খাবার থেকেও এটি পাওয়া যায়।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত সবুজ শাক-সবজি খাওয়ার পাশাপাশি, ভিটামিন কে১ সমৃদ্ধ খাবারগুলো ডায়েটে রাখার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। তবে কোনো ধরনের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
Post a Comment