সকাল থেকে রাত- মানুষের প্রতিদিনের সঙ্গী যেন এখন মোবাইল ফোন। ঘুম ভাঙা থেকে শুরু করে ঘুমানো পর্যন্ত সব মুহূর্তে হাতছাড়া হয় না এই যন্ত্রটি। এমনকি ঘুমোতে যাওয়ার সময়ও অনেকেই মোবাইল ফোন রেখে দেন মাথার পাশে। কিন্তু এই অভ্যাসই কি ডেকে আনছে একাধিক শারীরিক সমস্যা?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল ফোন মাথার কাছে রেখে ঘুমালে শরীরে একাধিক ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকিও থেকে যায়। তাই এখনই সাবধান হওয়া জরুরি। চলুন, জেনে নিই এই অভ্যাসের ক্ষতিকর দিকগুঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়
গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমের সময় মাথার কাছে মোবাইল থাকলে ঘুমে বিঘ্ন ঘটে। কারণ, আপনি ঘুমালেও মোবাইল থাকে ‘সচল’। বিভিন্ন সময়ে নোটিফিকেশনের আওয়াজ, ভাইব্রেশন- সব মিলিয়ে ঘন ঘন ঘুম ভেঙে যেতে পারে। এর ফলে গভীর ঘুমের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় ‘আরইএম স্লিপ’ ঠিকভাবে হয় না। এতে শরীরের বিশ্রাম হয় না, আর বাড়ে নানা রোগের আশঙ্কারেডিয়েশনের প্রভাবে ক্যানসারের ঝুঁকিএক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘এই সময় অনলাইন’ জানিয়েছে, মোবাইল ফোন থেকে প্রতিনিয়ত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন বা তেজস্ক্রিয় তরঙ্গ নির্গত হয়। এটি দীর্ঘ সময় শরীরে প্রবেশ করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। যদিও এ নিয়ে গবেষণাগুলো এখনো চলমান, তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক থাকতে বলছেন। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর সময় মোবাইল ফোন শরীর থেকে দূরে রাখা উচিত।
মস্তিষ্কে বাড়ে অস্বাভাবিক সক্রিয়তা
ঘুমের সময় মস্তিষ্ক ‘রিল্যাক্সড’ অবস্থায় থাকে। কিন্তু মোবাইল ফোন থেকে নির্গত তরঙ্গের কারণে ঘুমের মধ্যেও মস্তিষ্কের কার্যকলাপ বাড়তে পারে। এমনকি, মস্তিষ্কে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। এর ফলে ঘুমের মান খারাপ হয়ে যায় এবং শরীর পুরোপুরি বিশ্রাম পায় না।
ভ্রূণের ক্ষতি ও বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি
গবেষণায় উঠে এসেছে, গর্ভবতী নারীরা যদি নিয়মিত মোবাইল ফোন মাথার পাশে রেখে ঘুমান, তাহলে ভ্রূণের জেনেটিক মিউটেশনের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। ভবিষ্যতের সন্তানের জন্য এটি অত্যন্ত ক্ষতিকর। একইসঙ্গে, পুরুষদের ক্ষেত্রেও মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন স্পার্ম কাউন্ট কমিয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যা বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়ায়।
কমে যেতে পারে ব্রেনের কার্যক্ষমতা
মোবাইল ফোনের রেডিওফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়েশন মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমিয়ে দিতে পারে। এমনকি, দীর্ঘদিন এই অভ্যাস চালিয়ে গেলে অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিজঅর্ডার (ADHD)-এর মতো জটিল সমস্যারও সৃষ্টি হতে পারে।
কী করবেন?
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, ঘুমানোর সময় মোবাইল ফোন শরীর থেকে অন্তত ৩-৪ ফুট দূরে রেখে দিন। ইচ্ছা করলে ‘এয়ারপ্লেন মোড’ অন করে রাখতেও পারেন। এতে রেডিয়েশনের প্রভাব অনেকটাই কমবে। আর সবচেয়ে ভালো হয়, যদি ঘুমানোর আগে অন্তত ৩০ মিনিট মোবাইল ফোন ব্যবহার না করেন।।লো—
Post a Comment