ভাইরাল জ্বর একটি প্রচলিত স্বাস্থ্য অবস্থা যা বিভিন্ন ভাইরাল সংক্রমণের কারণে সব বয়সের মানুষকে প্রভাবিত করে। এটি শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি হিসাবে উদ্ভাসিত হয়, একটি আক্রমণকারী ভাইরাসের প্রতি ইমিউন সিস্টেমের প্রতিক্রিয়াকে সংকেত দেয়। যদিও ভাইরাল জ্বর সাধারণত প্রাণঘাতী নয়, তবে এর উপসর্গ, যেমন ক্লান্তি, শরীরে ব্যথা এবং উচ্চ জ্বর, দুর্বল করে দিতে পারে এবং দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে। গুরুতর ক্ষেত্রে, জটিলতা দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার মতো দুর্বল জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে।
বর্ষাকাল এলেই ভাইরাল জ্বর এবং ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। দুটি রোগের লক্ষণ সাধারণত প্রায় এক হলেও এগুলো সম্পূর্ণ আলাদা। ভাইরাল জ্বর এবং ডেঙ্গুর মধ্যে পার্থক্য কীভাবে করতে হয় তা জানা থাকলে সময়মতো সঠিক চিকিৎসা পেতে এবং জটিলতা এড়াতে সাহায্য করতে পারে।
ভাইরাল জ্বর কী?
ভাইরাল জ্বর হল সংক্রমণের কারণে সৃষ্ট জ্বরের জন্য ব্যবহৃত একটি সাধারণ শব্দ। এটি বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস দ্বারা উদ্ভূত হতে পারে, যার মধ্যে সাধারণ সর্দি, ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং আরও গুরুতর রোগের জন্য দায়ী ভাইরাসও রয়েছে। ভাইরাল জ্বর নিজেই কোনো রোগ নয় বরং অনেক ভাইরাল সংক্রমণের একটি লক্ষণ। এর ফলে সাধারণত উচ্চ তাপমাত্রা, শরীরে ব্যথা এবং অন্যান্য ফ্লুর মতো লক্ষণ দেখা দেয়।
ডেঙ্গু কি?
ডেঙ্গু জ্বর হল একটি নির্দিষ্ট ভাইরাল সংক্রমণ যা এডিস মশা দ্বারা ছড়িয়ে পড়ে। এটি সাধারণ ভাইরাল জ্বরের চেয়ে বেশি তীব্র এবং চিকিৎসা না করা হলে রক্তক্ষরণজনিত জ্বর বা শক সিনড্রোম সহ গুরুতর জটিলতা দেখা দিতে পারে। ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো সাধারণত সংক্রামিত মশা কামড়ানোর ৪ থেকে ৭ দিনের মধ্যে দেখা দেয়।
ডেঙ্গু ও ভাইরাল জ্বরের লক্ষণগুলো কি জেনে নেওয়া যাক।
ভাইরাসজনিত জ্বরের লক্ষণ
১. হালকা থেকে মাঝারি জ্বর।
২. শরীর ব্যথা
৩. অবসাদ
৪. গলা ব্যথা বা নাক দিয়ে পানি পড়া
৫. কাশি বা হালকা শ্বাসকষ্টের লক্ষণ
৬. বমি বমি ভাব এবং বমির মতো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল লক্ষণ থাকতে পারে
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ
১. হঠাৎ উচ্চ জ্বর (১০৪° ফারেনহাইট পর্যন্ত)
২. তীব্র মাথাব্যথা (প্রায়শই চোখের পিছনে)
৩. তীব্র পেশী এবং জয়েন্টে ব্যথা, যাকে প্রায়শই "ব্রেকবোন ফিভার" বলা হয়
৪. পেটে ব্যথা
৫. ফুসকুড়ি (প্রায়শই জ্বর শুরু হওয়ার কয়েক দিন পরে দেখা দেয়)
৬. নিম্ন রক্তচাপ
৭. বমি বমি ভাব
৮. হালকা রক্তপাত, যেমন নাক দিয়ে রক্তপাত বা মাড়ি দিয়ে১. বিশ্রাম এবং হাইড্রেশন পুনরুদ্ধারের চাবিকাঠি।
২. প্যারাসিটামলের মতো অ্যান্টিপাইরেটিক ওষুধ জ্বর এবং শরীরের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
৩. দ্বিতীয় ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ না থাকলে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয় না।
ডেঙ্গুর চিকিৎসা
১. ডেঙ্গুর জন্য কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা নেই। ব্যবস্থাপনা সহায়ক যত্নের ওপর জোর দেয়।
২. পানিশূন্যতা এবং জটিলতা প্রতিরোধের জন্য পুনঃহাইড্রেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩. গুরুতর ক্ষেত্রে, রক্তপাত বা নিম্ন রক্তচাপের মতো জটিলতা পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরের কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা নেই। অসুস্থতার শুরুতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া খুবই জরুরি। ডেঙ্গুর বিভিন্ন ধরন রয়েছে এবং দ্রুত রোগ নির্ণয় হলে তা স্বস্তি দেবে এবং হাইড্রেশন, পর্যবেক্ষণ ও সহায়ক চিকিৎসার মাধ্যমে কার্যকর ব্যবস্থাপনা সম্ভব হবে।
এর ফলে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বা ডেঙ্গু শকের মতো অবস্থায় পৌঁছানোর ঝুঁকি কমানো বা প্রতিরোধ করা যায়। চিকিৎসকরা প্রায়শই একটি সহজ রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ দেন যার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন আপনার ডেঙ্গু হয়েছে কি না। মনে রাখতে হবে, আইবুপ্রোফেন বা অ্যাসপিরিনের মতো ওষুধ দিয়ে নিজে নিজে চিকিৎসা করবেন না, কারণ এটি ডেঙ্গু রোগীদের রক্তপাতের সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দেবে। রক্তপাত
ভাইরাল জ্বরের চিকিৎসা
Post a Comment