আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত নারীদের রক্তে ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা গড়ে ২০ শতাংশ কমে যায় বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষকরা। তবে একই ধারা পুরুষদের ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। এ আবিষ্কার আলঝেইমারের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষভেদে ভিন্নতা বোঝার নতুন দিক উন্মোচন করেছে।আলঝেইমার্স অ্যান্ড ডিমেনশিয়া’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, আলঝেইমারে আক্রান্ত নারীদের রক্তে স্যাচুরেটেড ফ্যাট (অস্বাস্থ্যকর চর্বি) বেশি এবং আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট (যেমন ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড) কম পাওয়া গেছে।গবেষণার সিনিয়র লেখক ড. ক্রিস্টিনা লেগিদো-কুইগলি বলেন, “নারীদের ক্ষেত্রে এই ফ্যাট ঘাটতির বিষয়টি সবচেয়ে অবাক করার মতো ফলাফল। এটি হয়তো রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ হতে পারে, তবে নিশ্চিত হতে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল দরকার।”
গবেষণায় ৩০৬ জন আলঝেইমার রোগী, ১৬৫ জন মৃদু স্মৃতিভ্রংশে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং ৩৭০ জন সুস্থ মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ফলাফলে দেখা যায়, বিশেষ করে নারীদের রক্তে ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড কম থাকার পাশাপাশি স্যাচুরেটেড ফ্যাটের মাত্রা বেশি। এটি লিভারের কার্যক্রম ও বিপাক প্রক্রিয়ার ব্যাঘাতের সাথেও সম্পর্কিত হতে পারে।
গবেষকরা জানান, পুরুষদের তুলনায় নারীদের আলঝেইমারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ। এর পেছনে দীর্ঘায়ু, হরমোনগত পার্থক্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সামাজিক কারণগুলোও দায়ী হতে পাওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের জন্য অপরিহার্য হলেও শরীরে উৎপাদিত হয় না। তাই খাদ্যাভ্যাস ও পরিপূরক গ্রহণের মাধ্যমে তা পূরণ করতে হয়।
ALA: পাওয়া যায় চিয়া সিড, আখরোট ও তিসির বীজে।
DHA ও EPA: পাওয়া যায় সামুদ্রিক মাছ যেমন স্যামন, ম্যাকেরেল ও সার্ডিনে।
এনএইচএস অনুযায়ী, সপ্তাহে অন্তত দুইবার (১৪০ গ্রাম করে) মাছ খেতে হবে, যার মধ্যে একটি অবশ্যই চর্বিযুক্ত মাছ হওয়া জরুরি।
ড. লেগিদো-কুইগলি বলেন, “নারীদের ক্ষেত্রে ৫০ বছর বয়স থেকেই ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা কমতে শুরু করে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে, খাদ্যাভ্যাস বা সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ এ ঘাটতি পূরণে আলঝেইমারের ঝুঁকি কমাতে পারে কিনা।”
আলঝেইমার্স রিসার্চ ইউকের ড. জুলিয়া ডাডলি বলেন, “রোগটি কীভাবে নারীদের শরীরে ভিন্নভাবে প্রভাব ফেলে তা বোঝা গেলে ভবিষ্যতে চিকিৎসা ও পরামর্শ আরও নির্দিষ্টভাবে দেওয়া সম্ভব হবে।
Post a Comment