পরকীয়াকে কি ভালোবাসা বলা যায়? এই প্রশ্নটি জটিল এবং এর উত্তর ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। তবে মনোবিজ্ঞানী ও সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরকীয়াকে সাধারণত খাঁটি ভালোবাসা বলা যায় না, বরং এর পেছনে অন্য অনেক কারণ থাকে।পরকীয়ার মূল কারণগুলো কী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠার পেছনে কিছু সাধারণ কারণ থাকে, যা ভালোবাসার চেয়ে বেশি একঘেয়েমি, মানসিক বা শারীরিক চাহিদা থেকে আসে। যেমনদাম্পত্য জীবনে অসন্তুষ্টি: সম্পর্কের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব, অবহেলা, বা শারীরিক ঘনিষ্ঠতার অতৃপ্তি পরকীয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। যখন একজন ব্যক্তি তার সঙ্গীর কাছ থেকে প্রত্যাশিত মানসিক বা শারীরিক সমর্থন পায় না, তখন সে অন্য সম্পর্কের দিকে ঝুঁকতে পারে।
একঘেয়েমি: দীর্ঘদিনের সম্পর্কে একঘেয়েমি আসা স্বাভাবিক। এই একঘেয়েমি কাটাতে অনেকেই নতুনত্বের খোঁজে অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
মানসিক সমস্যা: অনেক সময় মানসিক চাপ, হতাশা, বা আত্মবিশ্বাসের অভাবের কারণে মানুষ পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। নতুন সম্পর্কে তারা নিজেদের আরও আকর্ষণীয় বা মূল্যবান মনে প্রতিশোধ: একজন সঙ্গী যদি জানতে পারে যে তার অন্য সঙ্গী পরকীয়ায় লিপ্ত, তাহলে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যও অনেকে এমন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
শারীরিক আকর্ষণ: কিছু ক্ষেত্রে, পরকীয়া কেবল শারীরিক আকর্ষণের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে, যেখানে গভীর মানসিক সংযোগ বা ভালোবাসার কোনো স্থান থাকে না।
পরকীয়া কেন ভালোবাসা নয়?
যদিও পরকীয়াতে আকর্ষণ বা মোহ থাকতে পারে, তবে একে প্রকৃত ভালোবাসা বলা কঠিন। বিশেষজ্ঞরা এর পেছনে কয়েকটি কারণ তুলে ধরেছেন:
বিশ্বাস ও সততার অভাব: ভালোবাসার মূল ভিত্তি হলো বিশ্বাস এবং সততা। পরকীয়ার সম্পর্ক যেহেতু গোপনীয়তা এবং মিথ্যাচারের ওপর নির্ভরশীল, সেখানে এই উপাদানগুলো অনুঅস্থায়ী প্রকৃতি: পরকীয়ার সম্পর্ক সাধারণত স্বল্পস্থায়ী হয়। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, পরকীয়ার সম্পর্কের যে আনন্দ বা উত্তেজনা থাকে, তা মূলত লুকোচুরি এবং নতুনত্বের কারণে তৈরি হয়। এই উত্তেজনা স্থায়ী হয় না এবং সম্পর্কটি সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী প্রতিশ্রুতিতে পরিণত হয় না।
ক্ষতিকর প্রভাব: পরকীয়ার কারণে মূল সম্পর্কটি ভেঙে যায়, যা পরিবার, বিশেষ করে শিশুদের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যদি এটি ভালোবাসা হতো, তবে তা এত ধ্বংসাত্মক হতো না।
পরিশেষে বলা যায়, পরকীয়া একটি জটিল সামাজিক এবং মানসিক বিষয়। এর পেছনে শারীরিক চাহিদা, মানসিক সমর্থন, নতুনত্বের আকাঙ্ক্ষা বা অন্য কোনো সমস্যা থাকতে পারে। তবে সুস্থ ও টেকসই সম্পর্কের জন্য যোগাযোগ, পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সততা অত্যন্ত জরুরি।পস্থিত।করে।:
Post a Comment