গরমের দিনে ঠান্ডা পেঁপে, নাশতার সঙ্গে পেঁপে কিংবা সালাদ ও স্মুদি- সব জায়গায় এর ব্যবহার দেখা যায়। মিষ্টি স্বাদ, হজম সহজ করা এবং পুষ্টিগুণের কারণে অনেকেই এটিকে ‘প্রাকৃতিক ওষুধ’ মনে করেন। পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পাচক এনজাইম পাপেইন থাকে। এগুলো হজম শক্তি বাড়ায়, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে এবং ত্বক রাখে উজ্জ্বল।তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব ফল সব মানুষের জন্য সমানভাবে উপকারী হয় না। তাই পেঁপে পুষ্টিকর হওয়া সত্ত্বেও কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। সম্প্রতি ভারতের জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা (এনআইএইচ) সায়েন্স ডাইরেক্ট ও ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশনের গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। নিচে বিস্তারিত জানানো হলো—ল্যাটেক্স অ্যালার্জি রয়েছে যাদের: সায়েন্স ডাইরেক্টের গবেষণা অনুযায়ী, পেঁপেতে থাকা চিটিনেজ প্রোটিন ল্যাটেক্স অ্যালার্জির রোগীদের শরীরে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে হাঁচি, চুলকানি, এমনকি শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা হতে পারে। যাদের ল্যাটেক্সে অ্যালার্জি রয়েছে, তারা একেবারেই পেঁপে খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
গর্ভবতী নারী: বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁচা বা আধাপাকা পেঁপে গর্ভবতী নারীদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এতে থাকা ল্যাটেক্স ও পাপেইন গর্ভাশয়ে সংকোচন সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে সময়ের আগেই প্রসব হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। যদিও পুরোপুরি পাকা পেঁপে কিছুটা নিরাপদ ধরা হয়, তবু গর্ভাবস্থায় একেবারে না খাওয়াই নিরাপদ।
হৃদস্পন্দনজনিত রোগে আক্রান্তরা: পেঁপেতে থাকা কিছু সায়ানোজেনিক যৌগ শরীরে হাইড্রোজেন সায়ানাইড তৈরি করতে পারে, যা স্বাভাবিক ব্যক্তিদের জন্য বড় সমস্যা না হলেও হৃদস্পন্দনের জটিলতায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। যারা হার্ট অ্যারিথমিয়া বা অনিয়মিত হার্টবিটের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের পেঁপে খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উহাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্তরা: পেঁপের কিছু উপাদান থাইরয়েড হরমোনের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলতে পারে। হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি শরীরের বিপাক প্রক্রিয়াকে আরও ধীর করে তুলতে পারে। ফলে ক্লান্তি, ওজন বৃদ্ধি, ঠান্ডা লাগা ইত্যাদি উপসর্গ বাড়তে পারে। তাই এই রোগীরা পেঁপে খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
যাদের কিডনিতে পাথরের ঝুঁকি রয়েছে: পেঁপেতে ভিটামিন সির মাত্রা অনেক বেশি। শরীরে এটি ‘অক্সালেট’ হিসেবে রূপান্তরিত হয়, যা ‘ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্টোন’ তৈরি করতে পারে। ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন জানায়, অতিরিক্ত ভিটামিন সি গ্রহণ কিডনির পাথরের ঝুঁকি বাড়ায়। যাদের আগে কখনো কিডনিতে পাথর হয়েছে বা ঝুঁকি রয়েছে, তাদের পেঁপে খাওয়ার ক্ষেত্রে পরিমিতি বোধ জরুরি।চিত।
Post a Comment