জিন, জাদু ও বদনজর থেকে আত্মরক্ষার উপায়

 


আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই যুগেও অনেক মানুষ জীন, জাদু ও বদনজরের প্রভাবে ভোগে বলে বিশ্বাস করে। কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে, কেউ অকারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে বা সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়—অনেক সময় এসবের পেছনে অদৃশ্য কোনো কারণ খোঁজা হয়, যার মধ্যে জাদু বা নজরের কথা উঠে আসে। ইসলাম এ ধরনের ক্ষতিকর প্রভাবের অস্তিত্ব স্বীকার করে এবং তা থেকে আত্মরক্ষার নির্ভরযোগ্য পদ্ধতিও বাতলে দিয়েছে। কুরআন ও হাদীসে নির্দিষ্ট কিছু দোয়া, সূরা ও আমলের মাধ্যমে একজন মুসলমান সহজেই এইসব অদৃশ্য বিপদ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন।

আত্মরক্ষার উপায়সমূহ—


কুরআনের আয়াত পাঠ


প্রতিদিন ফজর ও মাগরিবের পর এবং ঘুমের আগে আয়াতুল কুরসি (সূরা বাকারা ২:২৫৫) পড়া উচিত। হাদিসে এসেছে, এটি পড়লে রাতে শয়তান তার কাছাকাছি আসতে পারে না।


সূরা ফালাক ও সূরা নাস সকালে ও সন্ধ্যায় ৩ বার করে পড়া সুন্নত। রাসূল (সা.) এগুলোকে ‘মুআউইযাতাইন’ বলেছেন এবং জাদু ও বদনজর থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এগুলো পড়তেন।


সূরা ইখলাস সূরা ফালাক ও নাস-এর সঙ্গে একত্রে ৩ বার করে পড়া রাসূল (সা.)-এর সুন্নত।

সূরা বাকারা সম্পূর্ণ বা প্রথম ও শেষ দুই পড়া। রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাকারা পড়ে, সে শয়তান থেকে নিরাপদ থাকে।

দোয়া ও জিকর


بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ*

 (সুবহান আবু দাউদ, তিরমিজি)


সকালে ও সন্ধ্যায় ৩ বার পড়লে জীন, জাদু বা কষ্টদায়ক কিছু ক্ষতি করতে পারবে না।


রাসূল (সা.)-এর শেখানো বদনজর থেকে বাঁচার দোয়া— أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ

বুখারী


নিয়মিত জিকর ও ইবাদত

৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়া, সেজদাহ ও তাওবা করা, প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াত করা, হালাল রুজি উপার্জন করা ও সন্দেহজনক বিষয় থেকে দূরে থাকা।


বিশেষ আমল


ঘরে ঝাড়ফুঁক করা (রুকইয়া): সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসী, সূরা ইখলাস, ফালাক, নাস পড়ে পানি বা তেল বা নিজের হাতে ফুঁ দিয়ে শরীরে লাগানো যেতে পারে। 

ঘরে সূরা বাকারা তিলাওয়াত: হাদীস অনুযায়ী, যেই ঘরে সূরা বাকারা পড়া হয়, শয়তান সে ঘর থেকে পালিয়ে যায় (সহীহ মুসলিম)।



যে কাজগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে


কবিরাজ বা ঝাড়ফুঁককারীর কাছে যাওয়া যারা কুফরি বা শরিয়তবিরোধী কাজ করে, তাবিজ, গন্ধবস্তু বা যাদুবিদ্যা ব্যবহার করা। বিদআত বা শরিয়তবিরোধী কোন কর্মকাণ্ড করা।


ইসলাম আমাদের আত্মরক্ষার জন্য আত্মিক প্রস্তুতি নিতে বলে—নিয়মিত ইবাদত, দোয়া ও যিকর। এর সাথে বিশ্বাস রাখতে হবে যে, একমাত্র আল্লাহই রক্ষা করতে পারেন, অন্য কেউ না।



Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post