যেসব খাবার খেলে অকালে পাকবে না চুল

 সুন্দর ঝলমলে কালো চুল কে না চায় বলুন। কিন্তু তরুণ বয়সেও অনেকের মাথাভর্তি পাকা চুল দেখা যায় প্রায়ই। এটা নিয়ে বিড়ম্বনার কমতি নেই। মনঃকষ্টেও ভোগেন অনেকে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ, ধূমপান, শরীরের ভিটামিন বি ১২-এর অভাব, বংশগতভাবে বা থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতিসহ নানা কারণে চুল সাদা হয়ে পারে। তবে অল্প বয়সে চুল পাকার সমস্যার সমাধান করতে পারে প্রতিদিনকার খাবার।


যে কারণেই হোক না কেন অকালে চুল পেকে গেলে সেটি মানুষের মনের উপর অনেকখানি প্রভাব ফেলে। অবসাদ, আত্মবিশ্বাসের অভাবও তৈরি হতে পারে এতে করে। পাকা চুল ঢাকতে অনেকেই ব্যবহার নানারকম রাসায়নিক উপাদানসমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্যবহার চুল ও ত্বকের ক্ষতি করে থাকেন। আপনি কি জানেন খুব সহজেই এই সমস্যার সমাধান হতে পারে আপনার খাদ্যাভ্যাসে একটু পরিবর্তন আনলেই। কিভাবে? চলুন জেনে আসি খাদ্যতালিকায় কোন খাবারগুলি রাখলে হতে পারে সমস্যার সমাধান:  


১. রোজ সকালে গুড়ের সঙ্গে কয়েক দানা মেথি মিশিয়ে খেয়ে নিন। এতে আপনার পাকা চুলের সমস্যা দূর হবে। তবে ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলে গুড় খাওয়া চলবেনা।


২. কালো তিল চুলের জন্যে বেশ উপকারী। চুল কালো রাখতে কালো তিলের জুড়ি নেই। সপ্তাহে একদিন অন্তর অন্তর এক চামচ কালো তিল খেলে পাকা চুলের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।


৩. অকালে চুল পাকা রোধ করতে খেতে পারেন বাদাম। নিয়মিত বাদাম খাওয়ার পাশাপাশি বাদামের তেল চুলে মাখলে উপকার মিলবে।  


৪. চুল সুন্দর ঘন কালো রাখতে গাজরে খান। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, পটাশিয়াম এবং বিটা ক্যারোটিন যা চুলের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে বেশ উপকারী। তাই রোজ অর্ধেক গ্লাস গাজরের রস পানে পাকা চুলের সমস্যার থেকে মুক্তি পেতে পারেন।


৫. সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ছোলা খান। এতে রয়েছে বি১২ ও ফলিক অ্যাসিড। যা আপনার সুস্বাস্থ্যের পাশাপাশি নিশ্চিত করবে সুন্দরবর্তমান সময়ে চুল পড়া, শুষ্কতা ও ধীরগতির বৃদ্ধি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো—ভুল খাদ্যাভ্যাস, পুষ্টির অভাব ও চাপপূর্ণ জীবন। স্বাস্থ্যকর ও লম্বা চুল কেবল ভালো শ্যাম্পু বা তেল দিয়েই নয়, বরং সুষম খাদ্যের মাধ্যমেও অর্জন করা যায়।


আপনি যদি চুলের বৃদ্ধি দ্রুত করতে চান এবং চুল পড়া ও চুল পাকা কমাতে চান , তাহলে প্রথমেই সেই ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদানগুলো চিহ্নিত করা গুরুত্বপূর্ণ, যা চুলের গোড়াকে শক্তিশালী করে এবং তাদের সুস্থ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।


যে ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে


নিউ ইয়র্ক-ভিত্তিক কসমেটিক স্কিন বিশেষজ্ঞ মিশেল গ্রিনের মতে, চুলের স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো চুল পড়া এবং পাতলা হওয়া রোধ করতে সাহায্য করে। তিনি বলেন, ‘সঠিক চুলের বৃদ্ধির জন্য, ভিটামিন বি, ডি, ই, জিঙ্ক, বায়োটিন ও আয়রনের সুষম গ্রহণ প্রয়োজন। বিশেষ করে ভিটামিন বি৭ অর্থাৎ বায়োটিন এবং বি১২ চুলকে শক্তিশালী করতে এবং নরম ও কোমল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


বায়োটিনকে চুলের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে এবং নতুন চুলের বৃদ্ধি বাড়ায়। এর অভাবের ফলে চুল পাতলা হয়ে যায় এবং পড়ে যায়। বায়োটিনের চাহিদা পূরণের জন্য, খাদ্যতালিকায় ডিম, বাদাম, আখরোট, ফুলকপি, ব্রকলি ও সয়াজাতীয় পণ্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।


এ ছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শে বায়োটিন সাপ্লিমেন্টও গ্রহণ করা যেতে পারে। বি১২ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যা দুগ্ধজাত পণ্য থেকে পাওয়া যেতে পারে। ভিটামিন এ আমাদের মাথার ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে এবং সিবাম (এক ধরনের প্রাকৃতিক তেল) উৎপাদনে সাহায্য করে, যা চুল শুকিয়ে যাওয়া রোধ করে এবং তাদের বৃদ্ধি উন্নত করে। ভিটামিন এ-এর অভাব মাথার ত্বক শুষ্ক ও জ্বালাপোড়া করতে পারে। গাজর, মিষ্টি আলু, পালং শাক, কুমড়া, আম ও দুধের মতো খাবার ভিটামিন এ সমৃদ্ধ।


যে ভিটামিনের অভাবে চুল পাকে


কম বয়সে চুল পাকার কারণ হিসেবে ধরা হয় ভিটামিন বি১২ এবং ভিটামিন ডি-এর অভাব। ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণ করতে রোদে বসে থাকা শুরু করুন। এ ছাড়া আপনার খাদ্যতালিকায় দুধ, দই, পনির, মাশরুম, ডিম ও চর্বিযুক্ত মাছ অন্তর্ভুক্ত করুন।


চুল পাকা রোধ করতে আপনার খাদ্যতালিকায় ভিটামিন বি১২, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড অন্তর্ভুক্ত করুন। 

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post