৮ লক্ষণ দেখে জেনে নিন আপনার কিডনি ভালো আছে কি না

 

কিডনির অসুখকে নিরব ঘাতক বলা হয়। বিকল হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত কোন নোটিশ না দিয়ে কাজ চালিয়ে যাবে। চুপিসারে এই রোগ আপনার শরীরে বাসা বেঁধে আপনাকে শেষ করে দেয়। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর মধ্যে কিডনি ড্যামেজ ক্যান্সার ও হার্ট অ্যাটাকের পর অবস্থান করছে। শুধুমাত্র আমেরিকাতে প্রায় ২৬ মিলিয়ন মানুষ কিডনি সমস্যায় ভুগছেন। আতঙ্কের বিষয় হলো এর মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই জানেন না যে তারা কিডনি সমস্যায় ভুগছেন। যার ফলশ্রুতিতে সময়মত চিকিৎসার অভাবে অকালে হারাতে হচ্ছে প্রাণ। কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখে বুঝে নিতে পারেন আপনার কিডনিটি ভালো আছে কি না।১. প্রস্রাবে সমস্যা


তুলনামূলকভাবে প্রস্রাব কম হওয়া কিডনি রোগের অন্যতম একটি লক্ষণ। শুধু তাই নয়, রাতে ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগও কিডনি সমস্যার লক্ষণ প্রকাশ করে। সাধারণত কিডনির কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে এই ধরণের সমস্যা দেখা দেয়।




২. প্রস্রাবে রক্ত


সুস্থ কিডনি সাধারণত শরীরের ভিতরে রক্তে থাকা বর্জ্য পদার্থ প্রস্রাবের সঙ্গে বের করে দেয়। কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হলে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত কণিকা বের হয়ে যায়। সাধারণত কিডনি পাথর, কিডনি ইনফেকশন হলে এই সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এছাড়া প্রস্রাবে অনেক বেশি ফেনা দেখা দিলে বুঝতে হবে যে, প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন বের হয়ে যাচ্ছে। প্রস্রাবে অ্যালবুমিন নামক প্রোটিনের উপস্থিতির জন্যই এমন হয়।




৩. অনেক বেশি ক্লান্ত অনুভব হওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়া


কিডনির কার্যক্ষমতা কমে গেলে রক্তে দূষিত এবং বিষাক্ত পদার্থ জমতে থাকে। যার কারণে আপনি ক্লান্ত দুর্বল অনুভব করেন। এমনকি কাজে মনোযোগ হারিয়ে ফেলেন। এই সময় কিডনিতে উৎপন্ন ইরাথ্রোপয়েটিনের অভাবে রক্তস্বল্পতা দেখা দিয়ে থাকে। দুর্বলতা অনুভব করার এটি আরও একটি কারণ।




৪. পায়ের গোড়ালি ও পায়ের পাতা ফুলে গেলে


হঠাৎ করে পায়ের পাতা এবং গোড়ালি ফুলে যাওয়া কিডনি রোগের অন্যতম লক্ষণ। কিডনির কার্যক্ষমতা কমে গেলে দেহে সোডিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়, যার কারণে পায়ের পাতা, গোড়ালি ফুলে যায়।




৫. খাবারে অরুচি


বিভিন্ন কারণে খাবারে অরুচি হতে পারে। কিন্তু এটি ঘন ঘন খাবারে অরুচি হওয়া, বমি বমি ভাব লাগাকে অবহেলা করবেন না। শরীরে বিষাক্ত পদার্থ উৎপাদন হওয়ার কারণে এই ধরণে৬. চোখের চারপাশ ফুলে যাওয়া


যখন কিডনি থেকে বেশি পরিমাণে প্রোটিন প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যায়, তখন চোখের চারপাশ ফুলে যায়। তাই এই সমস্যাকে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।




৭. মাংসপেশিতে টান


আপনি হয়তো শুনে থাকবেন কিডনি সমস্যার কারণে ইলেক্ট্রোলাইট উপাদানের ভারসাম্যহীনতা হয়ে থাকে। ফলে মাংসপেশী টান, খিঁচুনি সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।




৮. ত্বকে ফুসকুড়ি এবং চুলকানি দেখা দেওয়া


রক্তে মিনারেল এবং পুষ্টি উপাদান ভারসাম্যহীন হয়ে পড়লে ত্বকে র‌্যাশ এবং চুলকানি দেখা দিয়ে থাকে। মূলত কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করলে শরীরে মিনারেল এবং পুষ্টি উপাদানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়ে থাকে।




সাধারণ এই লক্ষণগুলো দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিডনি পরীক্ষা অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। একটি ছোট অবহেলা কেড়ে নিতে পারে আপনার জীবন।




লেখক: সহকারী অধ্যাপক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালর সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।

Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post