কপালে কালো দাগ হওয়া কিসের লক্ষণ

অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, নামাজ পড়তে পড়তে কপালে কালো দাগ হওয়া কি কোনো বিশেষ আলামত? জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা শায়খ আহমাদুল্লাহ এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
কপালে কালো দাগ কি ইবাদতের প্রমাণ?
শায়খ আহমাদুল্লাহর মতে, কপালে কালো দাগ হওয়াটা একজন নেককার হওয়ার নিশ্চিত প্রমাণ নয়। তিনি কোরআনের একটি আয়াত (সূরা ফাতহ, আয়াত ২৯) উল্লেখ করে বলেন, যেখানে বলা হয়েছে সিজদার আলামত চেহারায় ফুটে ওঠে। অধিকাংশ মুফাসসিরদের মতে, এই আলামত বলতে চেহারার নূরানিয়াত, বিনয় এবং আল্লাহভীতি (খুশু-খুজু)-কে বোঝানো হয়েছে। কেয়ামতের দিনে ওযুর অঙ্গগুলোর মতো সিজদার অঙ্গগুলোতেও এক বিশেষ উজ্জ্বলতা থাকবে, মূলত সেই উজ্জ্বলতার কথাই এখানে বলা হয়েছে।
দাগ কেন পড়ে?
অনেক সময় দীর্ঘ সময় ধরে এবং বারবার সিজদা দেওয়ার কারণে কপালে দাগ পড়তে পারে। যদি এমন হয়, তবে তা একটি ভালো লক্ষণ হতে পারে। কিন্তু এই দাগকেই নেককারের একমাত্র প্রমাণ হিসেবে ধরা ঠিক নয়। শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, অনেকের ত্বকের সংবেদনশীলতার কারণে সামান্য ঘষা লাগলেই দাগ হয়ে যায়। আবার অনেকে খুব বেশি সিজদা দিলেও তাদের ত্বকের ধরনের কারণে কোনো দাগ পড়ে না। নারীদের ক্ষেত্রেও এটি দেখা যায়, তারা বেশি সিজদা করলেও সাধারণত তাদের কপালে দাগ পড়ে না।
আসল আলামত কী?
কপালে কালো দাগ থাকা বা না থাকা দিয়ে কারও ভালো বা মন্দ মানুষ হওয়ার বিচার করা উচিত নয়। শায়খ আহমাদুল্লাহর মতে, একজন মানুষের প্রকৃত ইবাদত এবং নেককার হওয়ার আসল আলামত ফুটে ওঠে তার আখলাক বা চরিত্রে, তার বিনয়ী আচরণে এবং অন্যান্য কাজকর্মের মধ্যে।
সুতরাং, কারও কপালে দাগ থাকলেই তিনি ভালো আর না থাকলে তিনি খারাপ, এমন সহজ হিসাব করার কোনো সুযোগ নেই। ইবাদতের আসল সৌন্দর্য হলো তার ভেতরের পরিবর্তন এবং সেই পরিবর্তন যখন তার আচরণে প্রকাশ পায়, সেটাই সবচেয়ে বড় আলামত
Post a Comment