নারীদের জরায়ুতে সিস্ট: কারণ, লক্ষণ ও করণীয়

 বর্তমানে নারীদের একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা হলো জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে সিস্ট হওয়া। এটি অনেক সময় অবিবাহিত কিশোরীদের মাঝেও দেখা যায়। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই এটি ক্ষতিকর নয়, তবে উপেক্ষা করলে তা মারাত্মক রূপ নিতে পারে।

সিস্ট কীভাবে হয়?

ওভারি বা ডিম্বাশয় হলো জরায়ুর পাশে অবস্থিত দুটি গ্রন্থি, যেখান থেকে নারীদের হরমোন নিঃসরণ হয় এবং ডিম্বাণু পরিপক্ব হয়। কখনো কখনো ওভারিতে ছোট ছোট পানিভর্তি থলে বা সিস্ট গঠিত হয়, যা স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায়। সবচেয়ে সাধারণ হচ্ছে ফাংশনাল সিস্ট, যা ডিম্বস্ফুটন ঠিকভাবে না হওয়ায় তৈরি হয়।


সিস্টের প্রকারভেদ:

. পলিসিস্টিক ওভারি (PCOS): দীর্ঘ সময় ধরে ডিম্বস্ফুটন না হলে ফলিকল জমে গিয়ে ওভারিতে ১০টির বেশি সিস্ট দেখা দেয়।

. এন্ডমেট্রিওটিক সিস্ট: এতে মাসিকের সময় তীব্র ব্যথা হয় এবং সন্তান ধারণে সমস্যা হতে পারে।

 . ডারময়েড সিস্ট: এক ধরনের টিউমার, যাতে দাঁত, চুলসহ শরীরের অন্যান্য টিস্যুও থাকতে

ডারময়েড সিস্ট: এক ধরনের টিউমার, যাতে দাঁত, চুলসহ শরীরের অন্যান্য টিস্যুও থাকতে পারে।

সিস্ট হওয়ার কারণ:


. হরমোনের ভারসাম্যহীনতা


. অনিয়মিত যৌন জীবন

অল্প বয়সে ঋতুস্রাব শুরু হওয়া


দেরিতে বিয়ে ও সন্তান নেওয়া


. বংশগত কারণ

লক্ষণসমূহ:

জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আফরোজা খানম রুনো জানান, ওভারিয়ান সিস্টের লক্ষণগুলো নিম্নরূপ—

. অনিয়মিত মাসিক

. তলপেটে ব্যথা ও ফোলা

. বমিভাব, প্রস্রাবে জ্বালা

. হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া

. কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া

. বুক জ্বালাপোড়া, পিঠ ও থাইয়ে ব্যথা

চিকিৎসা ও করণীয়:

লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। অবিবাহিত কিশোরীদের ক্ষেত্রেও চিকিৎসা দেওয়া যায়— প্রয়োজন হলে হরমোন নিয়ন্ত্রণে ওরাল পিল ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে সিস্ট নিয়ন্ত্রণে আসার পাশাপাশি ভবিষ্যতের জটিলতাও কমে যায়। বিয়ের পর যদি সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা না থাকে, তবুও ওরাল পিল কার্যকর।


যদি পরিবারে কারও এই রোগের ইতিহাস থাকে, তবে বেশি সতর্ক থাকা উচিত। এমনকি জটিল ক্ষেত্রে সন্তান নেওয়ার পর ওভারি অপসারণ করাও একটি চিকিৎসা পদ্ধতি হতে পারে।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post