ডক্টর, আমার গোছা গোছা চুল উঠে আসছে। হাত দিলেই মুঠো ভর্তি করে চুল উঠে। এখন অবস্থা এমন যে ভয়ে মাথায় হাতই লাগাইনা। কি? কথাগুলো কি খুব চেনা চেনা লাগছে? মনে হচ্ছে, আরে এটা তো আমারই সমস্যা! আসলে এ সমস্যা কেবল আপনার নয়। হাজার হাজার মানুষ এ সময় আপনার সাথে এই একই সমস্যার সম্মুখীন। আসুন জেনে নিই এ সমস্যা এবং এর সমাধানের পথ।
মুঠো মুঠো চুল ঝরার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে আরটিভি অনলাইনের পাঠকদের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন ডার্মাটোলজিস্ট ডা. তাসনিম তামান্না হক। তিনি স্কিনেজ ডার্মাকেয়ারের চীফ কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত।
চুল পড়া নিয়ে চিকিৎসক জানান, আগে জানতে হবে এ সমস্যা কেন হয়?
প্রতিদিন ৫০-১০০ টি চুল পড়া এটি নরমাল বিষয়। আসলে চুলের অনেকগুলি স্টেজ থাকে। অর্থাৎ আমরা মাথায় যে চুল দেখতে পাই বা শরীরের যেকোন স্থানে যে চুল থাকে সেগুলির কয়েকটি স্টেজ থাকে। এর একটি হচ্ছে এনাজেন ফেজ বা একে চুল বাড়ার স্টেজও বলতে পারেন। আরেকটি হচ্ছে টেলোজেন বা রেস্টিং ফেজ। এসময় চুলের কোন গ্রোথ হয়না এবং এই টেলোজেন চুলের নীচে নতুন একটি এনাজেন চুল বাড়তে থাকে যা এই রেষ্টিং ফেজ শেষ হওয়ার পর বাইরে বেরিয়ে আসে। স্বাভাবিক অবস্থায় মাত্র ১০-১৫% চুল এই রেস্টিং স্টেজে থাকে। বাকি ৮৫% চুল এসময় এনাজেন স্টেজে থাকে বলেই অনেক চুল পড়ছে বলে আমাদের মনে হয়না।খন কোন কারণে যদি এই ১০% এর জায়গায় ৩০% চুল রেস্টিং স্টেজে চলে যায় তাহলে কি হবে? সেই জায়গাগুলোতে নতুন চুল গজাবেনা এবং নরমাল সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বা তিনগুণ হারে চুল পড়তে থাকবে। ওই যে মুঠোয় মুঠোয় চুল পড়ার সমস্যা? সেটা মূলত এই এবনরমাল টেলোজেন স্টেজ এর জন্যই হয় আর তাই এই সমস্যাকে টেলোজেন এফ্লুভিয়াম বলা হয়।
তবে টেলোজেন এফ্লুভিয়াম সাথে সাথে আপনাকে এফেক্ট করবে বিষয়টা তেমন নয়। সাধারণত কোন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ২-৪ সপ্তাহ পর এটি শুরু হয়। যেমন জ্বর চলে যাওয়ার মাসখানেক পর থেকে আপনি গোছা গোছা চুল ঝরার সমস্যা দেখতে পারেন আর এটি কয়েক সপ্তাহ থেকে শুরু করে কয়েক মাস পর্যন্ত চলতে পারে।
মুঠো মুঠো চুল ঝরার চিকিৎসার বিষয়ে ডা. তাসনিম তামান্না হক জানান, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি সেলফ লিমিটিং অর্থাৎ যে কারণে এটি শুরু হয়েছে সেটি সেরে গেলে এ সমস্যাও দুর হয়ে যায়। তবে অনেক সময় দীর্ঘ মেয়াদে চুল পাতলা হয়ে যাওয়া বা টাক পড়ার মত সমস্যাও তৈরি হতে পারে। তাই কি কারণে টেলোজেন এফ্লুভিয়াম শুরু হয়েছে সেটি খোঁজা এবং সেটির চিকিৎসা যত দ্রুত সম্ভব শুরু করা প্রয়োজন। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোন মেডিসিন হঠাৎ শুরু বা বন্ধ করা যাবেনা। হরমোনের সমস্যা থাকতে পারে এমন উপসর্গ থাকলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
Post a Comment