time
Welcome to Our Website!

চট্টগ্রামে বাড়ছে চিকুনগুনিয়া

 


চট্টগ্রামে দ্রুত বাড়ছে মশাবাহিত ভাইরাস চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতিদিন নতুন করে শনাক্ত হচ্ছেন বহু রোগী। উদ্বেগজনক বিষয় হলো- চট্টগ্রামে সরকারি কোনো হাসপাতালেই এই রোগ শনাক্তের কিট নেই। উপসর্গ দেখা দিলে রোগীরা বাধ্য হচ্ছেন বেসরকারি হাসপাতালে গমন করতে। সেখানে চিকুনগুনিয়ার টেস্ট করাতে খরচ হচ্ছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত; যা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য বড় আর্থিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গু শনাক্তে সরকারি পর্যায়ে নির্ধারিত কিট, বাজেট, এমনকি স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। তবে চিকুনগুনিয়ার মতো একটি ছোঁয়াচে রোগের ক্ষেত্রে কোনো প্রস্তুতি না থাকাটা স্বাস্থ্য খাতের একটি বড় দুর্বলতা। এই পরিস্থিতিতে সরকারি ব্যবস্থাপনার ঘাটতি জনস্বাস্থ্যের ওপর কী প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে সংশ্লিষ্ট মহলেজেলা সিভিল সার্জনের তথ্যমতে, গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলতি বছরে চট্টগ্রামে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯৮৪ জন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার শনাক্ত হয়েছে ১০৯ জন। এ ছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা ৮৬৫ জন। বৃহস্পতিবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৩ জন।


চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে বর্তমানে ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের হার বেশি। তবে দুঃখজনকভাবে সরকারি হাসপাতালে চিকুনগুনিয়া শনাক্তের কিট নেই। আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কিটের চাহিদা জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।


চিকুনগুনিয়া সাধারণত উচ্চ জ্বর, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা ও শরীরে র‌্যাশের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। অনেক সময় এটি দীর্ঘস্থায়ী জয়েন্ট ব্যথার কারণও হতে পারে। সময়মতো শনাক্ত ও চিকিৎসা না হলে রোগীর দুর্ভোগ দীর্ঘস্থায়ী হয়।


চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এইচএম হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, আমাদের কাছে যে পরিমাণ জ্বরের রোগী আসছে, তার প্রায় ৮০ শতাংশেরই চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ রয়েছে। পরীক্ষার খরচ বেশি হওয়ায় অনেকে ল্যাবে যাচ্ছেন না। তাই লক্ষণ বিবেচনায়ই চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। হাসপাতাল ও ব্যক্তিগত চেম্বারে এখন ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ার রোগীই বেশি।


বেসরকারি হাসপাতালে গলাকাটা ফি : চট্টগ্রামের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ঘুরে জানা গেছে, চিকুনগুনিয়ার আরটি-পিসিআর পরীক্ষার জন্য নেওয়া হচ্ছে উচ্চমূল্য। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ও ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ৪ হাজার টাকা, পার্কভিউ হাসপাতালে ৪ হাজার ২০০ টাকা, এপিক হেলথ কেয়ারে ও পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সাড়ে ৪ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে।


সাধারণ মানুষের অভিযোগ, চিকুনগুনিয়ার কিট না থাকায় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে তারা চরম দুর্ভোগে পড়ছেন। বেসরকারি হাসপাতালে যেতে বাধ্য হলেও পরীক্ষা ফি অনেকের সামর্থ্যের বাইরে।


দুই নম্বর গেট মেয়র গলির চা দোকানি মনজরুল ইসলাম চারদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। তিনি বলেন, শুধু আমি না, আমার স্ত্রী আর ছেলেসহ সবাই জ্বরে পড়েছি। লক্ষণ অনুযায়ী ডাক্তার বলছে চিকুনগুনিয়া পরীক্ষা করাতে। ল্যাবে গিয়ে দেখি একজনের টেস্টেই ৫ হাজার টাকা লাগবে, তিনজনের জন্য ১৫ হাজার! এত টাকা দিয়ে কি টেস্ট করানো সম্ভব?


জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সরকারিভাবে ডেঙ্গু-করোনা টেস্টের নমুনা ফি নির্ধারণ করা হলেও চিকুনগুনিয়ার ফি নির্ধারণ করা হয়নি। তবে আমরা আপাতত সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে বেসরকারি ল্যাবগুলোতে সাড়ে ৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছি। কোনো ল্যাব এর থেকে বেশি টাকা নিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর সরকারি কিট এসে গেলে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।।

Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post