দেহে ভিটামিনের অভাব ও স্ট্রোকের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক নেই, তবে শরীরে ভিটামিন ডি-এর স্বল্প মাত্রা স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে—এমন ইঙ্গিত মিলেছে একটি সাম্প্রতিক গবেষণায়।
ডাচ শহর রটারডামের ৯,৬৮০ জন অংশগ্রহণকারীর উপর পরিচালিত এক দীর্ঘমেয়াদি গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের শরীরে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কম ছিল, তাদের অতীতে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল। গবেষকরা তাদের মধ্যে স্ট্রোক হওয়া ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে পরবর্তী ১০ বছর বাকিদের পর্যবেক্ষণ করেন। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, নতুন করে স্ট্রোকের সঙ্গে ভিটামিন ডি-এর কম মাত্রার সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া না গেলেও, যাদের স্ট্রোক হয়েছে, তাদের মধ্যে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি বেশি ছিল।
গবেষণার লেখক ও রটারডামের ইরাসমাস ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টারের অধ্যাপক ড. কামরান ইকরাম জানান, গবেষণার লক্ষ্য ছিল, ভিটামিন ডি-এর মাত্রা স্ট্রোক ঘটানোর জন্য দায়ী কি না, তা বোঝা। যদিও সরাসরি প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে স্ট্রোকের পর ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির প্রবণতা ছিল চোখে পড়ার মতো। গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, স্ট্রোক হওয়ার পর রোগীদের খাদ্যাভ্যাস, রোদে কম বের হওয়া এবং সামগ্রিক শারীরিক দুর্বলতার কারণেও শরীরে ভিটামিন ডি কমে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনা মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, যত বেশি ভিটামিন খাবেন ততই ভালো।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, অতিরিক্ত ভিটামিন ডি শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাস ও কিছুটা সূর্যালোকই যথেষ্ট। বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিটামিন ডি-এর তীব্র ঘাটতির ক্ষেত্রে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ যৌক্তিক হলেও, শুধুমাত্র স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্য এখনই নিয়মিত ভিটামিন ডি গ্রহণের কোনো সুস্পষ্ট বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
সূত্র : আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন
Post a Comment