ফুল দেওয়ার পর দেখা গেল শহীদ মিনারটি ভাঙা

 

ফুল দেওয়ার পর দেখা গেল শহীদ মিনারটি ভাঙা  

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুনবতী ডিগ্রি কলেজের আঙিনায় একুশের প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন স্থানীয়রা। তবে বৃহস্পতিবার রাতেই ওই শহীদ মিনারটি ভাঙা অবস্থায় পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জামাল হোসেন বলেন,‘আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করার জন্য পুলিশ এবং প্রশাসনকে বলা হয়েছে। শহীদ মিনারটি ভাঙার কারণ ও জড়িত কারা খতিয়ে দেখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন কাজ করছে’। 

এই কর্মকর্তা জানান, এর আগেও শহীদ মিনারটির স্তম্ভ ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেছিল। পরে তা মেরামত করা হয়। এই শহীদ মিনারের ভেতরে লোহার রড দেওয়া নেই- শুধু কংক্রিট ও ইটের গাঁথুনি দেওয়া। তবে এবার ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কলেজ সূত্রে জানা যায়, অমর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে কলেজের শিক্ষকগণ এবং পরে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা কলেজ চত্বরের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন। পরে সবাই রাত সাড়ে ১২টার দিকে সেখান থেকে চলে যান। রাত আনুমানিক ২ টার দিকে বিকট শব্দ পেয়ে কলেজের নৈশপ্রহরী শহীদ মিনারের কাছে গিয়ে দেখেন তিনটি স্তম্ভের মধ্যে দুইটি ভেঙে পড়ে আছে। কলেজের নৈশপ্রহরী শামছুল আলম বলেন, ‘মাঝরাতে বিকট শব্দশুনে আমি বের হই। আশেপাশে খোঁজাখুঁজির পর শহীদ মিনারে গিয়ে দেখি দুইটি স্তম্ভ পড়ে আছে।’

গুনবতী ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ বলেন, ‘রাত দুইটার পর কলেজের নৈশপ্রহরী সামছুল আলম আমাকে ফোন করে শহীদ মিনারের দুটি স্তম্ভ ভাঙা অবস্থায় দেখার খবর দেয়। কিছুক্ষণ পর সেখানে গিয়ে কাউকে দেখিনি।’  

উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদা বলেন, ‘একুশ আমাদের চেতনা। একুশে ফেব্রুয়ারির পর থেকে এদেশের সকল আন্দোলন সংগ্রামের পরে দেশ স্বাধীন হয়েছে। যারা গুনবতী শহীদ মিনারটি ভেঙে দিয়েছে আমি সেই সকল অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতীকারীদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছি। সেইসঙ্গে  শহীদ মিনার ভেঙে ফেলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’

উপজেলা জামায়াতের আমীর মাহফুজুর রহমান বলেন,‘শহীদ মিনার আমাদের জাতীয় চেতনার প্রতীক। রাতের আধারে শহীদ মিনারের দুটি স্তম্ভ ভেঙে ফেলায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরাও চাই কারা ভেঙেছে, তা বের হয়ে আসুক।’ 

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। তবে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় এখনই কারা শহীদ মিনার ভেঙেছে, তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এই ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি জিডি করেছে। ঘটনাটি দুর্ঘটনা বলে মনে হচ্ছে না।’

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post