ক্ষণস্থায়ী পৃথিবী মুমিনের জন্য পরীক্ষার হলের মতো। পরকালে সফল হতে অবশ্যই এই পরীক্ষায় সফলকাম হতে হবে। এরপরই মিলবে কাঙ্ক্ষিত জান্নাত। তবে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী সফর শেষে প্রত্যেককে মৃত্যুর মধ্যদিয়ে চিরকালের আবাসস্থলে প্রবেশ করতে হবে। চিরসত্য মৃত্যুকে ঘিরে তাই জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই।
প্রশ্ন আসে, মানুষ মারা গেলে কখন বুঝতে পারে সে মারা গেছে? ইসলামের আলোকে এই প্রশ্নের উত্তর অত্যন্ত স্পষ্ট: মৃত্যুর আগ মুহূর্তে একজন মানুষ টের পেয়ে যায় যে তার গন্তব্য কোথায় হতে যাচ্ছে। কোরআন, সহিহ হাদিস ও প্রখ্যাত ইমামদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে এ বিষয়ে আমরা বিস্তারিত ধারণা পাই।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, অবশেষে যখন তাদের কারও মৃত্যু আসে, সে বলে, হে আমার রব! আমাকে আবার ফেরত পাঠান, যাতে আমি ভালো কাজ করতে পারি। (সুরা মুমিনুন: ৯৯–১০০)য়াতে স্পষ্ট, মৃত ব্যক্তি জানতে পারে যে সে মারা গেছে এবং অনুতপ্ত হয়ে আমল করার জন্য দুনিয়াতে ফিরতে চায়।
বারা ইবনে আজেব (রা.) বর্ণিত বিখ্যাত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, যখন একজন মুমিন মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছায়, তখন আসমান থেকে সুন্দর ও উজ্জ্বল চেহারার ফেরেশতারা আসেন। ফেরেশতারা জান্নাতের সুগন্ধি ও কাফন নিয়ে আসেন। মালাকুল মাওত বলেন- ‘হে শান্ত আত্মা! আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টির দিকে বেরিয়ে এসো।’ আত্মা তার শরীর থেকে পানির ফোঁটার মতো সহজে বেরিয়ে যায়। আর বদকারের প্রাণ নেন আজাবের ফেরেশতারা। তারা কালো চেহারা নিয়ে আসেন। তারা বলেন- ‘হে নাপাক আত্মা! আল্লাহর গজব ও ক্রোধের দিকে বের হয়ে আয়।’ আত্মা তখন কষ্টসহকারে ছটফট করে বের হয়। (মুসনাদে আহমদ: ১৮৫৫৭) এই হাদিস প্রমাণ করে, ভালো খারাপ সবাই তার মৃত্যুর অবস্থা বুঝতে পারে।
.রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যখন মানুষকে কবরস্থ করা হয় এবং সেখান থেকে মানুষ সরে যায়, তখন সে তাদের পদচাপ শুনতে পায়।’ (বুখারি: ১৩৩৮; মুসলিম: ২৮৭০)
এটি প্রমাণ করে, মৃত ব্যক্তি তার দাফনের সময় আশপাশের জগত সম্পর্কে সচেতন থাকে এবং বুঝতে পারে যে সে মারা গেছে।
ইবনে তাইমিয়াহ বলেন, ‘মৃত ব্যক্তি তার দাফন ও পরবর্তী অবস্থা বুঝতে পারে।’ (মাজমুউল ফতোয়া: ২৪/৩৬২
Post a Comment